ইম্ফল, ২ ডিসেম্বর: মণিপুরের সবথেকে পুরনো জঙ্গি সংগঠন বলে পরিচিত ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএনএলএফ)-এর সঙ্গে কেন্দ্রের শান্তিচুক্তি হয়েছে। বুধবার দিল্লিতে এই শান্তিচুক্তি সংগঠিত হয়েছে। আর এই চুক্তির মাধ্যমে ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সশস্ত্র হিংসার অবসান ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই প্রসঙ্গে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং শনিবার বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের জঙ্গি সংগঠন ইউএনএলএফ-এর মধ্যে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যে শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর লক্ষ্যে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।
ইউএনএলএফের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সত্যিই আনন্দিত। শান্তির সূচনা করতে ও মণিপুরে ঐক্য আনতে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। আমি জনগণকে অনুরোধ করব, তারা যে বিপুল উৎসাহ ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইউএনএলএফকে শান্তি আলোচনায় যোগদানে রাজী করিয়েছে, সেই একই উদ্যোম ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে অন্যান্য গোষ্ঠীগুলিকেও দ্রুত শান্তি আলোচনায় যুক্ত করতে সক্রিয় হোক।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে কয়েক দশক ধরে চলা হিংসার ঘটনায় অনেক সাধারণ মানুষ ও পুলিশকর্মীর প্রাণ গিয়েছে। সহিংসতার কারণেও অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। ২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মণিপুরের পূর্বতন সরকারগুলি শান্তি ও আলোচনায় অংশগ্রহণের পরিবর্তে হত্যাকে একমাত্র সমাধান হিসেবে মনে করত। বিক্ষুব্ধ হোক বা বেসামরিক বা পুলিশ কর্মী প্রত্যেকের জীবনই মূল্যবান। তিনি বলেন, তিন বছর আগে ইউএনএলএফের সঙ্গে শান্তি চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। মণিপুরের জনগণের সমর্থন ছাড়া এই শান্তি চুক্তি বাস্তবায়িত হত না। চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে সম্মত হওয়ার জন্য আমি ইউএনএলএফ এবং তার সশস্ত্র শাখা এমপিএকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের ৯৯ শতাংশ মানুষ এই চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে খুশি। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, রাজনীতিতে না জড়িয়ে আসুন আমরা সবাইকে দেশ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করি। আমরা কারো বিরুদ্ধে নই। আমরা কেবল চাই বাইরে থেকে প্রচুর সংখ্যক লোকের আগমনের প্রেক্ষিতে যাতে আদিবাসীদের তাদের পরিচয় হারিয়ে না যায় সেজন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। আমরা শুধুমাত্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে চাই।