পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সংখ্যাটা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যা কোনও উন্নয়নের ‘সংখ্যা’ নয়, এর পিছনে রয়েছে এক করুণ কাহিনি থেকে শুরু করে বর্বরতার চিত্র। ২০২৩ সালে ভারতে জোরপূর্বক উচ্ছেদের কারণে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৫ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ। সেই প্রতিবেদনই উঠে এসেছ এইচএলআরএন-এর মাধ্যমে। তথ্য অনুযায়ী এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক অঞ্চলের মুসলিমরা। প্রায় ১,০৭,৪৪৯টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। যার ফলে ভিটেমাটি হারিয়েছে ৫,১৫,৭৫২ জন মানুষ। এই প্রতিবেদন গত সাত বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড করা বার্ষিক সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।
নতুন দিল্লি-ভিত্তিক হাউজিং অ্যান্ড ল্যান্ড রাইটস নেটওয়ার্ক (এইচএলআরএন) দ্বারা প্রকাশিত “ভারতে জোরপূর্বক উচ্ছেদ: ‘২০২২ এবং ২০২৩” শিরোনামের এই তথ্য সামনে এনেছে।
এইচএলআরএন-এর ওয়েবসাইটি অনুযায়ী আবাসন এবং জমির মানবাধিকারের স্বীকৃতি, প্রচার এবং আদায়ের জন্য কাজ করে এই সংস্থা। সমস্ত ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়ের মানুষ, বিশেষ করে প্রান্তিক সম্প্রদায় যাতে নিরাপদে, নিশ্চিন্তে থাকার সুযোগ পায় তাই দেখে সংস্থাটি। ভারতে ২০২২-২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িঘর ভাঙার সংখ্যা তুলে ধরে এই সংস্থাটি ষষ্ঠ রিপোর্ট প্রকাশ করল। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ সাত হাজার বাড়ি রাষ্ট্রের নির্দেশে ভেঙে জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। এইচএলআরএন-এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে প্রতিবেদন শুরু করার পর ২৩টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে উল্লেখযোগ্যভাবে এই উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। এছাড়া ছোট ছোট শহরগুলিতেও এই ধবংসলীলা অব্যাহত থেকেছে। এর মধ্যে দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ২০২৩ সালে। আনুমানিক ২ লক্ষ ৮ হাজার মানুষকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়।
বিচার বিভাগীয় নির্দেশগুলি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যার ফলে দুই বছরে ২ লক্ষ ৯ হাজার মানুষকে উচ্ছেদ হতে হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক অঞ্চলের মুসলিমরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের অভাব ছিল, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের গা ছাড়া মনোভাব, ফলে একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে।
ফলস্বরূপ, ভারত জুড়ে আনুমানিক ১৭ মিলিয়ন মানুষ বিভিন্ন কারণে উচ্ছেদ এবং বাস্তুচ্যুতির হুমকির মধ্যে বসবাস করে চলেছে।