নয়াদিল্লি, ২৪ জুলাই : রাজধানীর মদনপুর খাদার রোহিঙ্গা শিবিরের অস্থায়ী মসজিদ, ওজুখানা, শৌচালয় ও টিউব ওয়েল বৃহস্পতিবার সকালে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট ও শরণার্থীদের থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জানিয়েছে, আধিকারিকরা বলেছেন যে, তাঁদের মসজিদ রয়েছে সরকারি জায়গায় এবং তাদের বিরুদ্ধে সেই জমি জবরদখলের অভিযোগ তোলা হয়েছে। উদ্বাস্তু শিবিরের যে অংশ উত্তরপ্রদেশের মধ্যে ছিল, সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে মেন রোডের কাছে তাঁবুতে পাঠিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পুলিশদের সাহায্যে আধিকারিকরা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে মসজিদ। ফজরের নামাজের ঘন্টা খানেক পরে চলে এই ধ্বংসযজ্ঞ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ৩৩ বছর বয়সী রোহিঙ্গা বলেন, মসজিদ না ভাঙার অনুরোধ করলেও আধিকারিকরা তাতে কান দেননি। তিনি আরও বলেন, “বুলডোজার যখন মসজিদটি মাটিতে মিশিয়ে দিল তখন ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। আমাদের সবার চোখে তখন জল।” মসজিদ ভাঙার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আধিকারিক ও পুলিশের উপস্থিতিতেই ভাঙা হয় মসজিদ।
পুলিশের দাবি, ইমারতটি মসজিদ ছিল না, কিন্তু রোহিঙ্গারা বলছে তারা সেখানে প্রতিদিন নামাজ পড়ত। এই বিষয়টি মীমাংসার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসডিএম সরিতা বিহার এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রসঙ্গত, প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গার বাস এই শিবিরেই ১৩ জুন আগুন ‘লেগে’ পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া তাঁবুতে বাস করছিল রোহিঙ্গারা। এক রোহিঙ্গা বলেন যে, যাঁরা তাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন তাঁদের জানা উচিত যে তারা উদ্বাস্তু এবং মায়ানমারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা দেশে ফিরে যাবে। তিনি আরও বলেন, “জমির মালিক হওয়ার কোনও অধিকার আমাদের নেই। আমরা শিবিরে বাস করছি কারণ আমাদের যাওয়ার কোনও জায়গা নেই।” শৌচালয় ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার ফলে ভীষণ সমস্যায় পড়েছে মহিলারা। এদিকে, উত্তরপ্রদেশের জলশক্তি মন্ত্রী মহেন্দ্র সিং আনন্দের সঙ্গে জানিয়েছেন যে, সেচ দফতরের এলাকাধীন রোহিঙ্গা শিবির সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এই কাজে লেফটেন্যান্ট রাজ্যপালের পূর্ণ সমর্থন ছিল।