পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : কয়েকদিন ধরে একটানা চলা পাকিস্তানের রাজনৈতিক ডামাডোলের যবনিকা পতন হয়েছে শনিবার গভীর রাতে। অনাস্থা প্রস্থাবে হেরে ৩ বছর ৭ মাস ২৩ দিন ক্ষমতায় থাকার পর অপসারিত হলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু দুঁদে খেলোয়াড়, লড়াকু এক অধিনায়ককে এইভাবে ক্রিজের বাইরে বের করার নেপথ্যে উঠে আসছে চার কুশীলবের নাম ।
কয়েক দফা মুলতবির পর দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তানের সংসদ অধিবেশন অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ভোটাভুটি শেষে প্যানেল স্পিকার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
শাহবাজ শরিফঃ পাকিস্তানের চার বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। ইমরানের মতো প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ নওয়াজও শেষ করতে পারেননি। বর্তমানে নওয়াজ ব্রিটেনে নির্বাসিত। শিল্পপতি পরিবারের ছেলে শাহবাজ, আবেগপ্রবণ বক্তব্য রাখার জন্য পাক রাজনীতিতে সুপরিচিত।
আসিফ আলি জারদারিঃ ১৯৮৭ সালে বেনজির ভুট্টোর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার পরের বছরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন বেনজির। জারদারি পাকিস্তানে সিন্ধু প্রদেশের মানুষ। সম্পন্ন ধনী পরিবারেই জন্ম । নিজের প্লেবয় ইমেজের জন্য পরিচিত তিনি। পাক রাজনীতির জগতে জারদারি পরিচিত মিস্টার টেন পার্সেন্ট নেমে। সরকারি চুক্তির পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ১০ শতাংশ কমিশন খেতেন বলেই তার এই নাম।
বিলাবল ভুট্টো জারদারিঃ বেনজির এবং আসিফ আলি জারদারির জ্যেষ্ঠ পুত্র। মায়ের হত্যাকান্ডের পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে পিপিপির চেয়ারম্যান হয়ে রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ। পড়াশোনা করেছেন অক্সফোর্ডে, বয়স ৩৩।
মৌলানা ফজলুর রহমানঃ ইসলামি রাজনীতিবিদ হিসাবেই আত্মপ্রকাশ। পরবর্তীতে অবশ্য স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। মাওলানা মুফতী ফজলুর রহমান ২১শে জুন ১৯৫৩ সালে ডেরা ইসমাঈল খান জেলার আধুল খয়েল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর বাবা মুফতি মাহমুদ ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে সদস্য এবং জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
উল্লেখ্য দিনভর নাটকীয়তার পর শনিবার রাতে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ক্ষমতাচ্যুতির মধ্যদিয়ে দেশটির নির্বাচিত কোনও প্রধানমন্ত্রী মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না। তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফয়সাল জাভেদ খান এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে সরকারি বাসভবন থেকে বিদায় নেন ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে তিনি বেরিয়ে যান। কারণ পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সার পদত্যাগের পর তিনি ধরে নিয়েছেন অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটের ফলাফল তার অনুকূলে নাও আসতে পারে। তাকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ছাড়তে হবে।