পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এবার কুমির আর মানুষের মধ্যে লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল গুজরাতের ভাদোদরা। শুধু সাক্ষীই থাকল না, কুমিরে মুখ থেকে এক ব্যক্তিকে বের করে এনে তার জীবনরক্ষা করল গ্রামবাসীরা। গ্রামে চার যুবকের এক রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল সকলে।
রবিবার বিশ্বামিত্র নদীর ধারে ঘাপটি মেরে বসেছিল দৈত্যকার এক কুমির। হঠাৎ সুযোগ বুঝে নদীর ধারে আসা এক ব্যক্তির পা ধরে টানতে টানতে হিড়হিড় করে নদীর দিকে নিয়ে যেতে থাকে কুমিরটি। এর পরেই শুরু হয় কুমিরের মুখ থেকে ওই ব্যক্তিকে বাঁচানোর লড়াই। ওই ব্যক্তির আর্ত চিৎকারে ছুটে আসে ৪ যুবক। দৈত্যকার আকারের কুমিরের কাছ থেকে ওই ব্যক্তিকে বের করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নরপথ রাথওয়াকে কুমিরের হাঁ থেকে বের করে তাকে এসএসজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
ঘটনাটি বর্ণনা করার সময় বন্যপ্রাণী কর্মী হেমন্ত ভাধওয়ানা বলেন, পঞ্চমহলের হালোলের বাসিন্দা রাথওয়া রাত ১১.৩০ টার দিকে সয়াজিগঞ্জের দর্শনাম কমপ্লেক্সের কাছে নদীতে যান। আর তখনই একটি কুমির তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার দুই পা চোয়ালে চেপে ধরে। তবে নদীতে যাওয়ার সময় রাথওয়া মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে জানা গেছে। সেই সময় ওই নদীর কাছাকাছি দিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। তিনি রাথওয়া’র চিৎকার শুনে কাছাকাছি থাকা কয়েকজন যুবককে এই খবর দেন তিনি। তড়িঘড়ি চার যুবক সেখানে এসে নরপথ রাথওয়াকে কুমিরের মুখ উদ্ধারের চেষ্টা করেন। প্রথমে তারা কুমিরটিকে ভয় পাওয়ার জন্য তার দিকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। এদিকে কুমিরটি নরপথ রাথওয়াকে টেনে নদীর উল্টো পার ভাদোদরা জেলের সেন্ট্রাল জেলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই সময় চলে কুমির আর মানুষের মধ্যে লড়াই। এর পর নরপথ রাথওয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা।
স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, প্রায়ই নদীর তীরে ৬ থেকে ৭টা কুমিরকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
বন্যপ্রাণী কর্মী হেমন্ত ভাধওয়ানা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা খুব কঠিন ছিল। চারদিকে তখন শুধুই রাতের অন্ধকার। ফলে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা অসম্ভবকে সম্ভব করে লড়াই করে সাহসের পরিচয় দিয়েছে। কুমিরটি যখন ওই ব্যক্তিকে টেনে নিয়ে নদীর উল্টো পারে নিয়ে যায়, স্বেচ্ছাসেবকরা রাথওয়া’রকে বাঁচানোর জন্য কুমিরটিকে লাঠি পেটা করতে থাকে। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে রুদ্ধশ্বাস যুদ্ধ চালানোর পরে কুমিরটি হাল ছেড়ে দেয়।
কুমিরটি নরপথ রাথওয়ার পা ছেড়ে দিয়ে নদীর দিকে জলে চলে যায়। উদ্ধার হওয়ার পর ভয়ে কাঁপতে থাকে রাথওয়ার। তড়িঘড়ি নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসজি হাসপাতালে। তার দুটি পায়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।