পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবশেষে দ্বন্দ্বের অবসান। ব্রাত্য বসুর মধ্যস্থতায় কুনাল-ডেরেক তিক্ততার মধুরেন সমাপয়েৎ ঘটল শনিবার। বুধবার সকালে দলীয় পদ খোয়ানোর পর বৃহস্পতিবার বাদ যান তারকা প্রচার তালিকা থেকে। এরপর থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চাঁচাছোলা একাধিক শব্দবাণ প্রয়োগ করেন কুনাল। অবশেষে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনিই গাড়িতে করে কুণাল ঘোষকে নিয়ে হাজির হন জোড়-ফুলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের বাড়িতে। সেখানেই এই ত্রয়ী বৈঠক হয়।
বুধবার দলীয় পদ থেকে কুনালের অপসারণ নির্দেশিকায় স্বাক্ষর ছিল ডেরেকের। তারপরই তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্রকে কুইজ মাস্টার পিওন বলে কটাক্ষ করেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। সূত্রের খবর, কুণালের সঙ্গে দলের এই পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছেও দরবার করা হয়। কুণালকে লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল। তারপর থেকেই কুণালের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যাপারে দলের অন্দরে নানা তোড়জোড় শুরু হয়
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার উত্তর কলকাতায় একটি ক্লাবের রক্তদান অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তখন মঞ্চে ছিলেন দলত্যাগী তৃণমূল নেতা তথা ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। মঞ্চে তাপসবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন কুনাল। পরদিনই বিবৃতি দিয়ে তাঁকে পদ থেকে বহিষ্কারের কথা জানায় তৃণমূল। এমনকী কুণালের কোনও বক্তব্যকে তৃণমূলের বক্তব্য বলে প্রচার করা যাবে না বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।
শনিবারের বৈঠক শেষে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি বারবার বলে এসেছি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলাম, আছি, থাকব। আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” এরপরই হাসি মুখে গান ধরেন তিনি। গাইলেন, “আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে…”
তবে বৈঠকের রফাসূত্র কী হল তা অন্ধকারেই থেকে গেল। সাংবাদিকদের বহু জোরাজুরিতে কুণাল ঘোষকে বলতে শোনা যায়, ‘কিছু তো কথা হয়েছেই। দেখতে পাবেন কী হল?’ মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘ভিতরে কী আলোচনা হয়েছে সেটা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তা নিয়ে তো বাইরে বলতে পারি না।’ পদ হারিয়ে ডেরেক ও’ব্রায়েনকে ‘পিওন’ বলেছিলেন কুণাল ঘোষ। সূত্রের খবর, এই নিয়েই শনিবার বৈঠকের শুরুতে ডেরেকের সঙ্গে কুণালের কথা হয়। জানা গিয়েছে, ডেরেক কুণালকে বলেন, ‘বস তা বলে তুমি পিওন বলবে। দিস ইজ নট ডান।’ সঙ্গে সঙ্গে কুণাল বলেন, ‘ওসব ছাড়ো তুমি। চা খাওয়াও।’ আপাতত কুণালকে প্রশমিত করার চেষ্টার নেপথ্যে কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? এই প্রশ্নও যেমন উঠছে, তেমনই কুণালবাবুর রাগ কি এ দিনের বৈঠকের পর মিটল? সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।