নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের সভাপতি জে পি নাড্ডা নির্দেশে যে তাঁর কিছুই যায় আসে না, ফের বুঝিয়ে দিলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্দেশ দওয়ার ২৪ ঘন্টা কাটত না কাটতে ফের রাজ্য ভাগের পক্ষ সওয়াল করলেন পাহাড়ের বিজেপি বিধায়ক।
নিজের দলের শীর্ষ নেতার নির্দেশকে তাচ্ছ্বিল্য করে বলেছেন, ‘উনি যাই বলুন না কেন পাহাড়-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ পিছিয়ে রয়েছে। তাই পৃথক রাজ্যের প্রয়োজন রয়েছে।’
নাড্ডার নির্দেশ অমান্য করার দায়ে কার্শিয়াংয়ের দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে দাবি জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। যদিও এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া।
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল রাজ্য ভাগের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপির একাধিক সাংসদ-বিধায়ক। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। যদিও রাজ্যের পদ্ম শিবিরের দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ নেতা রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে। বাংলাকে টুকরো-টুকরো করার দাবি যে দলের পক্ষে ক্ষতি বয়ে আনতে পারে তা ভালই জানেন।
রাজ্য ভাগ নিয়ে বেলাগাম সাংসদ-বিধায়কদের বৃহস্পতিবারই এক বার্তায় মুখ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। নিউটাউনের হোটেলে সাংসদ-বিধায়কদের বৈঠকে তিনি স্পষ্টই নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘রাজ্য ভাগ নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করা যাবে না।’
কিন্তু সেই নির্দেশের ২৪ ঘন্টা কাটার আগেই ফের রাজ্যভাগ নিয়ে মুখ খুলেছেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা।
এদিন রাখঢাক না রেখে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে উত্তরবঙ্গের মানুষের একটাই দাবি, পৃথক উত্তরবঙ্গ। তাঁদের দাবি যৌক্তিক বলেই আমি মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই বলেছিলেন, ভোকাল ফর লোকাল। সেই অনুযায়ী স্থানীয় বাসিন্দারা যা চায় তাই বলছি। আমরা উত্তরের বিভিন্ন জনজাতির স্বার্থে তাদের নিয়েই আন্দোলন করব।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটে অপ্রত্যাশিত ফল করলেও বিধানসভা এবং সদ্য সমাপ্ত পুরসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। সামনে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট রয়েছে। তার পরে পঞ্চায়েত ভোট। আর ওই ভোটে নিজেদের ভিত ধরে রাখতে আলাদা রাজ্যের দাবি ছাড়া উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আর কোনও পথ খোলা নেই। তাছাড়া দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি রাজ্যভাগের বিরুদ্ধেই হবেন, তাহলে তা প্রকাশ্যে কেন বলছেন না?