কৌশিক সালুই, বীরভূম: পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজের ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারি চাকুরির বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করল পুলিশ। শুক্রবার বীরভূমের মহম্মদ বাজার থানায় এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাঁইথিয়া বিধানসভার বিধায়ক নীলাবতি সাহা, লাভপুর বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের মুখ্য পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী, বীরভূম জেলা আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার সম্পাদক রবীন সরেন, মহম্মদ বাজার থানার আইসি মহম্মদ আলি এবং বীর শহীদ রাজেশ ওরাং এর পরিবার সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।
দীর্ঘ বাম শাসনে পশ্চিমবাংলায় সবথেকে বেশি ব্রাত্য ছিল আদিবাসী সমাজ। পশ্চিমবাংলায় পরিবর্তনের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন। পড়াশোনা থেকে চাকরি সবকিছুতেই আদিবাসী সমাজের উপস্থিতির হার পূর্বের থেকে বর্তমানে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই গতিকে ত্বরান্বিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করল বীরভূম জেলা পুলিশ।
বীর শহিদ রাজেশ ওরাং এর স্মৃতির উদ্দেশ্যে আদিবাসী ছেলেমেয়েদের সরকারি চাকরি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চাকরির জন্য শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এদিন উদ্বোধন হল। শুরুতে ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী এই প্রশিক্ষণ নেবেন মহম্মদ থানার এই কেন্দ্রে। আগামীদিনে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের প্রাপক ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বীরভূম জেলা আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার সম্পাদক রবিন সরেন বলেন,” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসীদের উন্নয়নের ব্যাপারে অনেক সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এবার আদিবাসী ছেলেমেয়েরা যাতে সরকারি চাকরি লাভ করতে পারে তার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাকে সাধুবাদ জানাই”। বীর শহিদ রাজেশ ওরাং এর পরিবারের পক্ষ থেকে বোন শকুন্তলা ওরাং বলেন,” শহিদ দাদার স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে আদিবাসী সমাজের ছেলেমেয়েদের চাকুরীর যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে তার সুফল পাওয়া যাবে”।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী বলেন,” পশ্চিমবাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর পুলিশের মাধ্যমে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এর ওপর জোর দিয়েছেন। পুলিশের লাঠি বন্দুক দিয়ে আইনের শাসন নয় ঘাড়ে হাত রেখে পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী সমাজের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা থেকে সরকারি চাকরি কোন কিছুতেই যাতে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ পুলিশ সেনাবাহিনীতে সুযোগ পাওয়ার জন্য শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ এবং কম্পিউটার শিক্ষা দেওয়া হবে। সবক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণ কাজে নিযুক্ত থাকবেন”।