দেবশ্রী মজুমদার: বীরভূম লোকসভা (৪২) কেন্দ্রে জোট প্রার্থী হিসেবে বিশিষ্ট আইনজীবী মিল্টন রসিদ। তিনি ষোলো সালে হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালকে পরাজিত করেন। যদিও একুশ সালে তৃণমূলের অশোক চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হন। মিল্টন রসিদের নাম ঘোষণা অনেকের শির:পীড়ার কারণ। এক, হিন্দু মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের কাছে আছে তার অসীম গ্রহণযোগ্যতা। দুই, বরাবরই তিনি মানুষের দাবি নিয়ে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করেছেন। সেই আন্দোলনের মুখ বিশিষ্ট আইনজীবী মিল্টন রসিদের মুখোমুখি হন পুবের কলম প্রতিবেদক।
প্রতিবেদক: আপনার আন্দোলনের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকে। এবার কী করলেন?
মিল্টন: দেখুন। বরাবরই মানুষের দা্বি নিয়ে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করেছি। আর সেই দাবি আদায় করতে মানুষকে সাথে নিয়ে ব্রহ্মাণী নদীতে জার্সি গায়ে ফুটবলও খেলেছি। সারাবছর কিছু না কিছু করে থাকি। কখনও পুরোহিতদের জন্য বুকে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সিউড়ীর রাজপথে প্রতিবাদ করেছি। সতেরো সালের সাতই নভেম্বরে এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে বিধান সভার সচিবের কাছে সেতু নিয়ে আবেদন জমা দিই।
প্রতিবেদক : আপনি প্রার্থী হওয়ার পর কংগ্রেসের অন্দরে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। বেশ কিছু নেতা কর্মী আপনাকে প্রার্থী হিসেবে চান নি। আপনার বিরুদ্ধে তারা বিবেক ভোট দেওয়ার আবেদন রেখেছিল কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের কাছে। এর ফলে কতটা বেগ আপনাকে পেতে হবে, বলে মনে করছেন?
মিল্টন: একটা ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেটা কার্যকর হওয়ার আগে ধরা পড়ে যায়। প্রদেশ নেতৃত্ব সেটা ধরে ফেলে এবং তাদের ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করে। এরফলে ভালো হলো। ভিতর থেকে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না তারা। দল, কর্মী সমর্থক সবাই সাবধান হয়ে গেল। তাছাড়া আমি ভূমিপুত্র। কিন্তু দেখুন বিজেপি, তৃণমূল দলগুলোর বহিরাগত প্রার্থী। সে বীরভূম বলুন বা বহরমপুর বলুন এক দুটো উদাহরণ পাবেন। গোষ্ঠীকোন্দল তো তাদের। গোষ্ঠী কোন্দল আটকাতে তারাই বহিরাগত প্রার্থী দিয়েছে।
প্রতিবেদক: তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস না জিতলে এন আর সি করে মুসলিমদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে? কী বলবেন?
মিল্টন: এন আর সি হলে শুধু মুসলিম নয়, হিন্দুদেরও ভুগতে হবে। আসামে বেশী ভুক্তভোগী হিন্দুরাই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস যে যুক্তি দেখাচ্ছে, তা ঠিক নয়। দেখুন, তৃণমূল রাজ্যে বিয়াল্লিশ এবং আর তিনটি রাজ্যে তিনটি প্রার্থী দিয়েছে। সব মিলে পঁয়তাল্লিশ। ইণ্ডিয়া জোট সারা দেশে পাঁচশো পঁয়তাল্লিশটি প্রার্থী দিয়েছে। সরকার গঠন করতে লাগবে দুশো বাহাত্তর। তাহলে বিয়াল্লিশ বা পঁয়তাল্লিশটিতে জিতে তৃণমূল কী করে সংসদে এন আর সি আটকাবে?
সি এএ আইনের সময় তো ওরা প্রতিবাদ না করে আইন পাশে সাহায্য করতে পার্লামেন্ট ওয়াকাউট করেছিল। ওরা সেটাই করবে। মনে রাখবেন, বিকল্প সরকার দিতে পারে ইণ্ডিয়া। এই ভোট পার্লামেন্টের ভোট। আইন তৈরির ভোট। তাই এন আর সি বা সি এ এ একমাত্র আঁটকাতে পারে ইণ্ডিয়া জোট। আর মোদির ঘোষিত শত্রু কংগ্রেস। তৃণমূল নয়। মোদির সরকার গঠনে তৃণমূল সাহায্য করতে পারে। জোট নয়।