পারিজাত মোল্লা, মঙ্গলকোটঃ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে এক যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার বরাকর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, জেলার সদর আসানসোল থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আসানসোল পুলিশের তরফে পুলিশি হেফাজতের ঘটনায় দুজন পুলিশ কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুরো ঘটনায় পুলিশের আভ্যন্তরীণ বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকা সূত্রে প্রকাশ– গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার অন্তর্ভুক্ত বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির তরফে মহম্মদ আরমান নামে এক যুবককে ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে আনা হয়। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে ধৃত যুবকের পরিবারকে পুলিশের তরফে জানানো হয়, গ্রেফতার করে আনার পর রাতে শারীরিক অসুস্থতার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই যুবকের পরিবার আসানসোল হাসপাতালে গেলে, তারা দেখে তাদের পরিবারের সন্তান মৃত অবস্থায় মর্গে পড়ে আছে। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শয়ে শয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বরাকর পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর চালায়। ফাঁড়ির সামনে দুটি পুলিশের গাড়িতে– মোটরসাইকেলগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এলাকায় অঘোষিত বনধ শুরু হয়ে যায় এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। আসানসোল পুলিশ লাইন থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে ঘন্টা খানেকের চেস্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আসানসোল জেলা পুলিশ কমিশনারেটের তরফে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশের পাশাপাশি দুজন পুলিশ কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নিহত পরিবারের দাবি, কোনও অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তা আমরা জানি না গ্রেফতারের সময় এরেস্ট মেমোয় সই কার ছিল তাও আমরা জানিনা। আমাদের দাবি রাতের দিকে পুলিশি হেফাজতে ব্যাপক মারধর চলেছে বলেই মৃত্যু ঘটেছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত চাইছি– পাশাপাশি যে অফিসার তখন ফাঁড়িতে ডিউটিতে ছিলেন এবং ফাঁড়ির আইসির উপযুক্ত শাস্তি চাইছি আমরা। এই ঘটনা ঘিরে এলাকা থমথমে। চলছে পুলিশি টহলদারি।