পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: পাকিস্তানের বিপক্ষে পারথ টেস্টে নিজের জুতোয় ফিলিস্তিনে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজার সাধারণ মানুষগুলির পাশে দাঁড়াতে লিখিত শান্তির বার্তা দিতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ব্যাটার উসমান খোয়াজা। যদিও আইসিসির নিয়মের জেরে অজি তারকা সেই জুতো পরে মাঠে নামতে পারেননি। সেবারে ব্যর্থ হলেও এবার মেলবোর্ন টেস্টে তিনি ‘শান্তির’ প্রতীক হিসেবে নিজের ব্যাটে ও জুতোয় পায়রায় স্টিকার লাগাতে চেয়েছিলেন। এবারেও তাকে ওই স্টিকার ব্যবহারের অনুমতি দিল না তারা। খোয়াজার প্রতি আইসিসির এই দ্বিচারিতা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তাঁর মতে, মার্নাস লাবুশানেকে যদি তাঁর ব্যাটে ‘ধর্মীয়’ ঈগল লাগানোর অনুমতি পায়, তাহলে উসমান খোয়াজাকে তাঁর জুতোয় ‘শান্তির’ প্রতীক পায়রার স্টিকার লাগানোর অনুমতি দেওয়া উচিত আইসিসির।
অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটার মার্নাস লাবুশানেকে তাঁর ব্যাটে ঈগলের স্টিকার লাগানোর অনুমতি দেওয়া হয়। ঈzগলটি বাইবেলের একটি পদের অর্থ বহন করে। অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটার খ্রিস্টধর্মের অনুসারী, তাই তিনি আবেগের বশে নিজের ব্যাটে ওই ঈগলের স্টিকার প্রদর্শন করেন। উল্লেখ্য, আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনের ‘এফ’ ধারায় লেখা আছে, ‘একজন খেলোয়াড় তার পোশাক, সরঞ্জাম বা এমন কিছুতে ব্যক্তিগত বার্তা আইসিসির অনুমতি ছাড়া প্রদশর্ন করতে পারে না। রাজনৈতিক, ধর্মীয় অথবা বর্ণ-সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের কোনও বার্তা প্রদানের ক্ষেত্রে তারা অনুমতি পাবে না।’
লাবুশানে নিজের ব্যাটে ধর্মীয় ঈগলের স্টিকার ব্যবহার করতে পারলে খোয়াজা কেন শান্তির প্রতীক পায়রার স্টিকার ব্যবহার করতে পারবেন না? এর উত্তরে আইসিসির যুক্তি, ‘মার্নাস লাবুশানে নিজের ব্যাটে ঈগলের যে প্রতীক ব্যবহার করেন, সেটি মূলত বাইবেলের একটি পঙ্ক্তিকে তুলে ধরা হয়েছে। এটি তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছেন। তাই তাকে নতুন করে নিষেধ করা হয়নি। তবে খোয়াজা নিজের জুতোয় যে প্রতীক ব্যবহার করতে চাইছেন, সেটা রাজনৈতিক। তাই সেটার ব্যবহারের অনুমতি নেই।’
আইসিসির এহেন যুক্তিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আইসিসিকে তুলোধোনা করে তিনি বলেন, ‘লাবুশানের ব্যাটে ঈগল ও খোয়াজার ব্যাটে পায়রার স্টিকারের মধ্যে আমি কোনও পার্থক্য খুঁজে পাই না। আইসিসি একটির অনুমতি দিলেও অন্যটির অনুমতি কেন দেয়নি, বিষয়টি সত্যি মাথায় ঢুকছে না। আমরা সত্যিই খোয়াজাকে সমর্থন করি। আমার মনে হয়, সে যেটা করছে, সেটার নিশ্চিতভাবে একটা ভিত্তি আছে। সেটা সে সম্মানজনক উপায়েই করছে।’ একটু থেমে, ‘খোয়াজা নিজের জুতোয় লিখেছিলেন, প্রতিটি জীবনের মূল্য সমান। আমার মনে হয় না, এ কথাটি অপমানমূলক। সে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে সে নিজের মাথা উঁচু রাখতে পারে। এ লড়াইয়ে আমি ওর পাশে আছি।’