পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রয়াত বিশ্বের সব চেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি। ১১৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জাপানের বাসিন্দা কানে তানাকা। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি ছিলেন কানে তানাকা। গত ১৯ এপ্রিল প্রয়াত হন তিনি। সেইভাবে শারীরিকভাবে অসুস্থতা তাঁর শরীরে বাসা বাঁধেনি। জীবনের শেষ কয়েকটা দিন নার্সিং হোমে কাটাতে হয় তাঁকে। তবে নার্সিং হোমেও প্রাণবন্ত ছিলেন কানে তানাকা। জীবনের শেষের দিনগুলিতে নার্সিং হোমে বোর্ড গেম, অঙ্ক কষা ছিল তাঁর নেশা। সোডা ও চকোলেট খাওয়া ছিল তার প্যাশন।
২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিকে যাওয়ার কথা ছিল কানে তানাকার। সেখানের টর্চ রিলেতে অংশগ্রহণ করার জন্য হুইল চেয়ারে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে সেই পরিকল্পনা বাস্তবের রূপ পায়নি।
২০১৯ সালে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিশ্বের সবথেকে প্রবীণ মানুষ হিসেবে পরিচিতি দেয় কানা তানাকে।
‘ইকিগাই’ নামের একটি বইতে জীবনের বেঁচে থাকার অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বহুল জনপ্রিয় এই বইটিতে শেখানো হয়েছে সুস্থ ও আনন্দময় জীবন কাটানোর মূল মন্ত্র। এই বইটিতে লেখা আছে জাপানের প্রায় প্রত্যেক নাগরিকই জীবনের একটি উদ্দেশ্য নিয়ে বাঁচে। কোনও উদ্দেশ্য না থাকলে জীবনে বেঁচে থাকার অর্থ বৃথা।
সেইভাবেই জীবন কাটাতেন কানে তানাকা। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতেন তিনি। নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে জীবন কাটাতেন তিনি। কানা তানাকে প্রতিদিন ভোর ৬ টায় ঘুম থেকে উঠতেন। বয়সের কারণে কানে কম শুনতেন। তবে এই বয়সেও নিজে একটি নুডলস ও একটি রাইস কেকের দোকান চালাতেন। ১৯২২ সালে হিডিও তানাকাকে বিয়ে করেন। চারটি সন্তান ছিল তার। পরে আরও এক সন্তানকে দত্তক নেন তিনি।
উল্লেখ্য, জাপানিরা সাধারণত বহুবছর বাঁচেন। সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা যেমন মৃত্যুর হারকে কমিয়ে এনেছে, তেমনই কয়েকটি জিনিসের কারণে জাপানিরা দীর্ঘায়ু লাভ করে। জানা গিয়েছে, জাপানি পুরুষেরা গড়ে ৮০ বছর ও মহিলারা গড়ে ৮৬ বছর বাঁচেন। এমনকী সারা বিশ্বে শতায়ু মানুষের সংখ্যার বিচারে জাপান সবচেয়ে এগিয়ে।
যেকোন দেশের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবার নয়, জাপানের খাদ্য তালিকায় বড় একটা অংশ জুড়েই থাকে তাজা শাক-সবজি, ফার্মেন্টেড সয়া, ভাত ও মাছ। যা থেকে পর্যাপ্ত ফাইটোকেমিক্যালস, ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার এই নিয়ম খুব সহজেই দীর্ঘায়ু পেতে অবদান রাখে।