পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর ‘উগ্র ডানপন্থী’ সমর্থকরা দেশটির সংসদ, প্রেসিডেন্ট ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পর এখনও পর্যন্ত ১,৫০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদে লুলা দ্য সিলভা শপথ নেওয়ার ১ সপ্তাহ পর এই দাঙ্গা হল। লুলা এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকান্ড’ বলে উল্লেখ করে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এদিকে, বলসোনারো গত অক্টোবরের নির্বাচনের হারকে না মেনে ক্ষমতা হস্তান্তর না করেই আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন।
সোমবার পেটের ব্যথার কারণে লসোনারোকে ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সমর্থনে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় শহর সাও পাওলোর রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে গান গেয়ে ও নেচে ন্যায়ের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে। তবে হঠাৎ দাঙ্গার ঘটনায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ার বাসিন্দারা হতবাক হয়ে যান।
৪৩ বছর বয়সী ইওনার বিসপো বলেন, ‘মানুষের নিজেদের মতামত প্রকাশের অধিকার আছে, কিন্তু আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যকে ধ্বংস করা যাবে না।’ এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, যেসব ভবনে দাঙ্গাকারীরা তাণ্ডব চালিয়েছে সেসব ভবন থেকে আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করা হবে। ফলে অপরাধীদের গ্রেফতার করা সহজ হবে।
এদিকে বিচারমন্ত্রী ফ্লাভিও ডিনো বলেছেন, ‘এই তাণ্ডবকে সন্ত্রাসবাদ এবং অভ্যুত্থানের সমতুল্য বলা যায়। যারা বিক্ষোভকারীদের রাজধানীতে নিয়ে যেতে বাসের ভাড়া দিয়েছিল, পুলিশ তাদের ট্র্যাক করা শুরু করেছে। তারা ব্রাজিলের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে পারবে না।’ হামলার এই ঘটনার পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট প্যালেসে হামলাকারী নব্য ফ্যাসিবাদীদের বিচার করা হবে।
হামলায় অংশগ্রহণকারীদের ‘ভাঙচুরকারী’, ‘নব্য ফ্যাসিবাদী’ ও ‘অন্ধবিশ্বাসী’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। পুলিশ বলেছে, হামলায় জড়িত শেষ ব্যক্তি চিহ্নিত হওয়ার আগে পর্যন্ত অভিযান ও তদন্ত চলবে। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর কথা শোনা যায়নি। তবে হামলাকারীরা তিনটি সরকারি ভবনে তাণ্ডব চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করেছিলেন বামপন্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা। বলসোনারোর উগ্র সমর্থকরা নির্বাচনের এই ফলাফল মেনে নেননি। তারা যে কোনও ভাবে লুলাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছিলেন। ফলে ১ জানুয়ারি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে লুলা শপথ নেওয়ার পর দেশটির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালায় তারা।