এম এ হাকিম, বনগাঁ : ভারতের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দরের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য সাময়িকভাবে বন্ধ থাকার পরে অবশেষে ফের তা স্বাভাবিক হয়েছে। সম্প্রতি ভারত থেকে বাংলাদেশে বেশি পরিমাণে পাথর বোঝাই ট্রাক যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠায় ১০ জুলাই ভারত থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় পণ্যবাহী ট্রাকের যাতায়াত।
বাংলাদেশের আপত্তির জেরে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে ধর্না-অবস্থানে বসেন পাথর ব্যবসায়ী এবং ট্রাক চালকরা। এরফলে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত সমস্ত প্রকার পণ্য পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশমুখী কয়েকশো ট্রাক পেট্রাপোলে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হওয়ায় সীমান্ত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের দিক থেকে দৈনিক সীমিত আকারে পাথরবোঝাই গাড়ি ঢুকবে। শেষমেশ পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বেনাপোল শুল্ক ভবনের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলামের দাবি, সীমান্তে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। দৈনিক আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় বন্দরের বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে লোকালয়ে ভারতীয় ট্রাক চালকরা পাথর খালি করায় ঝুঁকি বাড়ছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বন্দর দিয়ে আপাতত পাথরবাহী ট্রাক সীমিত আকারে আমদানির কথা বলা হয়েছে।
বুধবার ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী ‘পুবের কলম’ প্রতিবেদককে বলেন, ভারতীয় ট্রাক চালকরা যাবতীয় করোনা বিধি মেনেই অতিরিক্ত সতর্কতার মধ্যে বাংলাদেশে রফতানির পণ্য পরিবহণ করছেন। বর্তমানে ৪০ টা পর্যন্ত পাথরের ট্রাক বাংলাদেশে যাচ্ছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। এছাড়া রফতানির অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে যাচ্ছে। বন্দরের বাইরে পণ্য খালাসজনিত যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল তা শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি আচমকা বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় ট্রাক চালকদের সম্পর্কে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনকে কেউ কেউ অহেতুক খেপিয়ে দিয়েছিল। ফলে ট্রাক চালকরা বন্দরের বাইরে পাথর খালি করতে পারছিলেন না। সমস্যার মুখে পড়েছিলেন। অন্যদিকে, বন্দরের মধ্যে পাথর রখার মত পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে বেনাপোল বন্দরের মধ্যেই পাথরের ট্রাক খালি করা যাচ্ছে ফলে ওই সমস্যা আর নেই।
কার্ত্তিক চক্রবর্তী আরও বলেন, বর্তমানে ভারতের পেট্রাপোল থেকে দৈনিক প্রায় সাড়ে তিনশো ট্রাক পণ্য বাংলাদেশের বেনাপোল স্থল বন্দরে যাচ্ছে। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল বন্দরে আসছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।