পুবের কলমোয়েব ডেস্ক: আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার অভিযোগে মোট ৪ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল গুজরাত পুলিশ। খবর করার জন্য এভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কেস দিয়ে গ্রেফতার করার পুলিশি পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করা হয় সাংবাদিক মহল ও বিদ্বজন মহল থেকে। সেই মামলায় এদিন ওই চার সাংবাদিকের অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ওই সাংবাদিকেদর গ্রেফতার করতে পারবে না গুজরাতের পুলিশ। শুধু তাই নয়, কেন ওই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হবে তার জবাব দেওয়ার জন্য গুজরাত সরকারকে এক সপ্তাহ সময় দিল সর্বোচ্চ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
ওই সাংবাদিকদের অভিযোগ, গুজরাত পুলিশের ক্রাইম বেঞ্চের পাঠানো সমনটি ‘বেআইনি’। শুধুমাত্র তাঁদের হেনস্থা করার জন্যই সমন পাঠানো হয়েছে। ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকে এটা করা হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি। আদানির সংস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখার কারণে প্রথমে রবি নায়ার এবং আনন্দ মাঙ্গনালে নামে দুই সাংবাদিককে তলব করে গুজরাত পুলিশ। এর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যান ওই দুই সাংবাদিক। সেই মামলায় গত ৩ নভেম্বর বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বেঞ্চ দুই সাংবাদিককে অন্তর্বতীকালীন রক্ষাকবচ দেয়। আদালত জানিয়ে দেয়, গুজরাত পুলিশ ওই দুই সাংবাদিককে এই মামলায় গ্রেফতার করতে পারবে না। এরপরও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কেস দেওয়া থেকে পিছপা হয়নি গুজরাত পুলিশ।
গত ১০ নভেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করে গুজরাত পুলিশ। সেই মামলাতেও ওই দুই সাংবাদিককে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ দেয় বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বেঞ্চ। তাঁদের বিরুদ্ধেও আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার অভিযোগ তোলা হয়েছে। গুজরাত পুলিশ ওই দুই সাংবাদিককে তলব করলে তাঁরাও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক রবি নায়ার এবং আনন্দ মাঙ্গনালে সহ চার সাংবদিকের করা মামলাটি ওঠে। বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি সঞ্জয় করোলের বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। সাংবাদিক রবি নায়ারদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার। তিনি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে জানান, যেহেতু বিচারপতি গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ নোটিশ পাঠিয়েছে, তাই সুপ্রিম কোর্টের নিয়মে ওই বেঞ্চেই মামলাটির শুনানি হওয়া উচিত। অন্যদিকে, গুজরাত সরকারের পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা আদালতে বলেন, তাঁরা কোনও বেঞ্চ বেছে নিতে চান না। ইংরেজি দৈনিকটির দুই সাংবাদিকের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ আগরওয়াল। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতিরা মামলাটি এক সপ্তাহ পরে শুনানি হবে বলে জানান।