পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যা মামলায় সউদি যুবরাজ বিন সালমানকে দায়মুক্তি দিল আমেরিকা। সউদি সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ সালমানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এক আদালতে খাশোগির বাগদত্তা মামলা করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর খাশোগিকে তুরস্কের ইস্তান্বুলে সউদি দূতাবাসের ভেতর হত্যা করা হয়। অভিযোগ ওঠে, সউদি আরবের যুবরাজ সালমানের নির্দেশেই সউদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাশোগিকে খুন করা হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দারাও বলেছেন, সউদি যুবরাজের আদেশেই এ হত্যাকাণ্ড। কিন্তু আদালতে মার্কিন বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, বিন সালমান যেহেতু এখন সউদি আরবের প্রধানমন্ত্রী, তাই তিনি এ মামলা থেকে দায়মুক্তি পাবেন। ওয়াশিংটনের এক আদালতে এ মামলার বিচারকাজ চলছে। এখন ওই মামলার অভিযুক্তদের তালিকা থেকে সউদি যুবরাজের নাম কেটে দেওয়া হবে। আমেরিকার এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জামাল খাশোগির প্রাক্তন বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস। মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তের পর ট্যুইটারে হাতিস চেঙ্গিস লেখেন, ‘জামাল আজ আবার মারা গেল। আমরা ভেবেছিলাম, আমেরিকা এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার করবে, কিন্তু স্বার্থ ও টাকার কাছে তারাও হেরে গেল।’ এদিকে, এ ঘটনায় আমেরিকায় অবস্থিত সউদি দূতাবাসের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক মুখপাত্র জানান, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগের দাবি, দেশটির আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে, কোনও রাষ্ট্রপ্রধানের বিচার আমেরিকায় করতে পারে না। যেহেতু বিন সালমান এখন সউদি আরবের প্রধানমন্ত্রী, তাই প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি নিজের পদাধিকারবলেই এ মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার অধিকার রাখেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সউদি বাদশাহ সালমান রাষ্ট্রীয় ডিক্রির মাধ্যমে পুত্র বিন সালমানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বানান। জামাল খাশোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন সউদি যুবরাজ। যদিও পরবর্তীতে সালমান জানান, এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানতেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ইস্তান্বুলের সউদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন খাশোগি। সেখান থেকে আর তাকে বের হতে দেখা যায়নি। ‘ডেমোক্রেসি ফর দ্য অ্যারাব ওয়ার্ল্ড নাও’-এর মুখপাত্র সারাহ লি হুইটসন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, জো বাইডেনের একক প্রভাবে বিন সালমানকে এ মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হল। অথচ বাইডেনই বলেছিলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সউদি যুবরাজের বিচার হবে।’