পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত পড়ুয়া বিষয়ক মামলা। রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দ্রুত ছাত্র সংসদের নির্বাচন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি বলেন, ‘প্রাক্তন পড়ুয়ারা যদি থাকে তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বের করে দিন। ঘর ছেড়ে দিলে মেইনটেন্সের কাজ শুরু করুন’।
যাদবপুরের ছাত্রের রহস্য মৃত্যুর পর বেশ কয়েকটি মামলা কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। একটি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ছাত্র সংসদকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। আদালতের বক্তব্য, ‘যাদবপুরের সমস্যা নিয়ে বিচার করতে হলে ছাত্রদের বক্তব্য শোনাও জরুরি’। সেখানেই উঠে আসে যাদবপুরে সায়েন্সের ছাত্রদের ইউনিয়ন নেই।
এদিনের শুনানিতে ছাত্রদের আইনজীবী বলেন, ‘ছাত্রদের ইউনিয়ন নেই। আর্টসের ইউনিয়ন আছে। ২০২০ নির্বাচনের পর আর কোনও নির্বাচন হয়নি। আর্টসের ক্ষেত্রে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের কয়েকজন এই মামলায় অংশ নিতে চান’। ওই আইনজীবী আরও জানান, ‘ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। যাবতীয় কিছু রাজনৈতিক কারণে হচ্ছে’। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যদি ইউনিয়ন না থাকে তাহলে ব্যক্তিগতভাবে কেউ আসতে পারেন। সায়ন্সের কোন ইউনিয়ন নেই। তাহলে বক্তব্য রাখা বন্ধ করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘ছাত্ররা যাঁরা পাশ করে গিয়েছেন, তাঁরা কীভাবে হস্টেলে থাকছেন? প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ঘরে গিয়ে দেখতে হবে, কারা এমন আছেন। তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বের করে দিন। ছেড়ে দিলে মেইন্টেনেন্স কাজ শুরু করুন’। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের কোনও কোনও ঘরে আলো নেই বলে অভিযোগ ছাত্রদের তরফে করা হয়। তার প্রেক্ষিতে কলেজ, হস্টেলের মেরামতির কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, গত সোমবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে ইউজিসি-র প্রতিনিধি দল। সেক্ষেত্রে এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ইউজিসি দেখবে রেগুলেশন প্রয়োগ হচ্ছে কিনা’। রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বলা হচ্ছে ইউনিয়ন নেই। আবার পাবলিক স্টেটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে। এটা কীভাবে সম্ভব?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সৌম্য মজুমদার বলেন, ‘২০১৬ থেকে ইউজিসি গ্র্যান্ট আপাতত বন্ধ। রাজ্য শুধু অধ্যাপকদের বেতন দেয়। ২৭৩ কোটি টাকা রাজ্য চেয়েছে’। তখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন, ‘আচার্যকে বলুন কিছু টাকার ব্যবস্থা করতে। ওঁ বিভিন্ন অধ্যাপকদের চা আর স্যানক্স খাওয়াচ্ছেন। ওঁকে বলুন টাকার ব্যবস্থা করতে’। এদিন কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ট নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।