পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ফরাসি উপনিবেশের পরাধীনতা থেকে মুক্তির ৫৯তম বার্ষিকী পালন করল উত্তর আফ্রিকার ইসলামি রাষ্ট্র আলজেরিয়া। সোমবার দেশজুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস। ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত এই দেশটিতে ফরাসি ঔপনিবেশিকদের শাসন ও প্রতিপত্তির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে ১৯৬২ সালে ৫ জুলাই। বিদেশী দখলদারদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নিহত হন ১৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ। উপনিবেশ বিরোধী সংগ্রামে আলজেরিয়ার প্রতিটি পরিবারই কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অবশ্য বীভৎস সেই ঘটনার ৬০ বছর পরেও ফ্রান্স তাদের চালানো নির্মম গণহত্যা ও নির্যাতনের সত্যতাকে স্বীকৃতি দেয়নি, আলজেরিয়ার সরকার বা সেদেশের নাগরিকদেরও কোনও ক্ষতিপূরণ প্রদান করেনি প্যারিস। ৫৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে আঙ্কারাভিত্তিক গবেষণাকেন্দ্রের উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আবদেননোর তোমি বলেন, ‘আলজেরীয়রা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র লড়াইয়ের জন্য গর্বিত।’ তোমির কথায়, ‘আলজেরীয়রা এমন একটি দেশের নৃশংসতা দেখেছে যারা নিজেদের মানবাধিকার ও সমতার রক্ষক বলে মনে করে।’
ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়া স্বাধীনতাকামী আলজেরীয় যোদ্ধাদের মধ্যে একজন ছিলেন আবদেলমাজিদ। তাঁর পুত্র আবদেলমাজিদ বোগুয়েদরার কথা থেকে তৎকালীন সময়ে ফরাসি সেনার চালানো অত্যাচার সম্পর্কে জানা যায়। বলছেন, তাঁর পিতার বয়স যখন ১৬ বছর ছিল তখন তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে পুরে নির্যাতন করা হত। আরও বলেন, ‘১৩২ বছরের দখলদারিতে আলজেরীয়দের যন্ত্রণার কথা বলতেন আমার পিতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার জন্য দেশবাসীর আত্মত্যাগের কথা জানেই না। আমাদের পূর্বপুরুষদের বিষয়ে সকলকে জানানোর চেষ্টা করতে হবে আমাদের।’ দেশের ইতিহাস নিয়ে নয়া প্রজন্মের অজ্ঞতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আবদেননোর তোমি বলছেন, যাঁরা স্বাধীনতার পরে জন্মগ্রহণ করেছেন তারা ঘরে থেকে আর্থ-সামাজিক দ্বিধায় ভুগছেন। তারা বিদেশে উন্নত জীবনের প্রত্যাশী। তাঁর কথায়, ‘এই প্রজন্মের অনুতাপ বলে কিছু নেই, ওরা শুধু উন্নত জীবন চায়।’