পারভেজ হোসেন,দিনহাটা দিনহাটা-২ নং ব্লকের গোসানিমারী ও সিতাই– শীতলখুচির মাঝে বয়ে গিয়েছে সিঙ্গিমারী নদী। পারাপার চলত আদাবাড়ীঘাট দিয়েই। দু’প্রান্তের বাসিন্দাদের যাতাযüাতের মাধ্যম ছিল নৌকো। কখনও বা বাঁশের তৈরি সাঁকো। আদাবাড়ীঘাটের সেই পথ দিযেüই নিযüমিত হাজার হাজার যাত্রীর যাতায়াত ছিল। বাম আমল থেকেই সেতু নির্মাণের জন্য আন্দোলন চলেছিল। পরে ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোাপাধ্যায়ের সমযü সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হযü। দীর্ঘ ৯ বছর পর ২০২০ সালে সেই সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হযü। তবে সেতু গড়ে ওঠে আদাবাড়ীঘাট থেকে ৭ কিমি দূরে সিঙ্গিমারীতে। যা দিনহাটা ও গোসানিমারীর সঙ্গে নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী সিতাই ও শিতলখুচির যোগাগোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হযেüছে।
স্বাভাবিকভাবেই সেতু নির্মাণে অনেকে উপকৃত হলেও বিপাকে পড়েছেন আদাবাড়িঘাট সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দারা। তারা জানান– আগে খরার সময় পায়ে হেঁটে প্রায় ২ কিলোমিটার নদীর চর অতিক্রম করতে হত। বর্ষাকালে নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটতো। আজ সেসব অতীত। কিন্তু সিঙ্গিমারীতে সেতু নির্মিত হওয়ায় বাতিল হয়েছে আদাবাড়ীঘাটের অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। বেড়েছে যাতায়াতের দূরত্ব। কৃষি– ব্যবসা– সব ক্ষেত্রেই কোণঠাসা জীবনযাপন করছেন আদাবাড়ীঘাট লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। আজ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের জন্য ২ কিলোমিটারের জায়গায় তাদের পাড়ি দিতে হচ্ছে ৮ কিলোমিটার পথ।
স্থানীয় বাসিন্দা ভোলানাথ বসু জানান– যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই সেতু আদাবাড়ীঘাট ও শিলদুয়ারঘাটের মধ্যে গড়ে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারনে সেটা পার্শ্ববর্তী সিঙ্গিমারীতে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন আদাবাড়ী এলাকার বাসিন্দারা। আদাবাড়ীঘাটেরসেই বাঁশের সাঁকো আজ আর নেই। নৌকা মেলাও ভার। চরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে এই অঞ্চলের বহু মানুষ যারা নদীর মাঝের চড়ে তরমুজ আবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারা আজ চরম ক্ষতির মুখে। রেশনের মত প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতেও তাদের আজ ৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয় । পাশাপাশি তিনি এও জানান– সেতুটি আদাবাড়ীঘাটে গড়ে উঠলে অনেক বেশি মানুষ উপকৃত হতেন।
এছাড়াও ঘাটকে কেন্দ্র করে আদাবড়ীতে গড়ে উঠেছিল অনেক দোকানপাঠ– হোটেল– ফলের দোকান– বাসস্ট্যান্ড। সব মিলিয়ে এক জমজমাট জায়গায় পৌঁছেছিল আদাবাড়ী ঘাট চত্বর। আজ সেখানে মাত্র তিনটি দোকান– লোকের সমাগম প্রায় নেই বললেই চলে। স্থানীয় এক প্রবীণ দোকানদার তারাপদ মিত্র জানান– আগে লোকজনের যাতায়াত বেশি থাকায় এখানে কারবারও ভালো চলত। কিন্তু আজকাল আর সেই রকম লোকের আনাগোনা নেই– তাই কারবারও অচল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্য কোনও কাজ না মেলায় এই দোকানদারিই চালিয়ে যেতে হচ্ছে।