পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ ৮০ বছরের বঞ্চনার পর অবশেষে তামিলনাড়ুর এক মন্দিরে প্রবেশের অধিকার পেল দলিত সম্প্রদায়। রবিবার কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্য দিয়ে তামিলনাড়ুর তিরুভান্নামালাই মন্দিরে প্রবেশ করেন তারা। বিগত ৮০ বছর ধরে তাদের এই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। কড়া পুলিশি পাহারায় উচ্চবর্ণের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নারী-পুরুষ শিশু মিলিয়ে প্রায় তিনশো দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দিরে প্রবেশ করে। দলিত পরিবারগুলি ফুলের মালা, পোঙ্গালে তৈরি খাবার নিয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশে নিবেদন করেন। এত বছর পর এই প্রথম মন্দিরে প্রবেশ করতে পেরে খুশি তারা।
থিরুভান্নামালাইয়ের থান্ডারামপাট্টুর মুথু মারিয়াম্মান মন্দিরটি হিন্দু ধর্মীয় ও দাতব্য এনডাউমেন্ট বোর্ডের অধীনে চলে। যেখানে প্রতি বছর পোঙ্গালের সময় ১২ দিনের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৮০ বছর দলিত পরিবারগুলির উপরে এই মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।
এবছর দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা গ্রামের প্রধানের কাছে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি চায়। তবে প্রথমে তাদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন গ্রামের প্রধানরা। এর পরে সেই আবেদন নিয়ে মন্দিরের এনডাউমেন্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় তারা। অবশেষে দলিত সম্প্রদায়ের আবেদন মেনে তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।
রবিবার সেই মতোই দীর্ঘ সময়ের বঞ্চনার ইতিহাস ঘুচিয়ে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পায় দলিত সম্প্রদায়। কিন্তু তাদের এই অধিকার মেনে নিতে নারাজ উচ্চ বর্ণের মানুষ। ইতিমধ্যেই তাদের এই ‘অনধিকার’ প্রবেশের বিরুদ্ধে সরকারি দফতরে অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে তারা।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, বিধানসভার স্পিকার আপ্পাভু, ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা, ডিএমকে-র সাংসদ এবং বিধায়করা, মুখ্য সচিব এবং অন্যান্য সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তারা মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুবার্ষিকীতে অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে শপথ নিয়েছেন। তামিলনাড়ুতে জেলাশাসক ও মন্দির কমিটির সুপারিশে এই নিয়ে তিনবার দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দিরে প্রবেশাধিকার পেল। প্রশ্ন উঠেছে, যে রাজ্যে নেতা-মন্ত্রীরা অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে শপথ নেন, সেখানে এখনও বর্ণ বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় কিভাবে?