পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মানুষের কত রকমেরই না নেশা থাকে। কোনওটা বিরক্তিকর, আবার কোনওটা প্রশংসনীয়। এই যেমন পাকিস্তানের সৈয়দ আফ্রিদির নেশা পাহাড়ের পাথরে আল্লাহ-রাসূলের নাম খোদাই করা ও ইসলামি ক্যালিগ্রাফি করা। তার এই নেশায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকে চারপাশের সবাই। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পাক-আফগান সীমান্তবর্তী লেন্ডি কোতাল এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আফ্রিদি। নিজের আগ্রহের ফলেই তিনি এখন অভিজ্ঞ শিলা লিপিকারে পরিণত হয়েছেন।
পাথরের ওপর তার হাতের কারুকাজ দেখে অভিভূত হচ্ছেন সকলে। সৈয়দ আফ্রিদি জানান, কেবল মনের টানেই এক সময় তিনি ছোট-ছোট পাথরে নানা ধরনের নকশা করতেন। এক সময় মনে হল, এই কাজটি ভালো করে শিখতে হবে। তাই তিনি প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের একজন বিখ্যাত খোদাই শিল্পীর কাছে ৩ বছর প্রশিক্ষণ নেন। এ সময় তিনি পাথরে বিভিন্ন নামফলক খোদাই করতেন। তারপর তিনি ২০০৪ সালের দিকে আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশে চলে যান। সেখানে তখন ন্যাটোর শাসন ছিল।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সেখানে তাদের কার্যক্রম চালাতো। ফলে সে সময় আফ্রিদির কাজের অভাব ছিল না। বরং সে সময় তিনি আর্থিকভাবেও বেশ স্বচ্ছল হয়ে ওঠেন। তবে ধীরে ধীরে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে নিজ দেশে ফিরে আসেন। আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসার পর তার ব্যস্ততা কমে যায়। এ সময় পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা আফ্রিদি তার কাজের জন্য বেছে নেন পাহাড়কেই। পাহাড়ের বিভিন্ন পাথরে তিনি নকশা আঁকতে শুরু করেন।
এভাবে তিনি খাইবার জেলার পাহাড়-পর্বতের নানা জায়গায় আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম, নবীগণের নাম, পবিত্র কুরআনের আয়াত, হাদিসের বাণী ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দোয়া খোদাই করেন। পাহাড়ের নির্জনতায় তার এসব শিল্পকর্ম অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। সৈয়দ আফ্রিদি আরও জানান, এভাবে পাহাড়ে কাজ করার কারণে তার অভ্যাসটা যেমন চালু আছে, তেমনই তিনি নিজের অন্তরে প্রশান্তি লাভ করেন।
বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার এসব শিল্পকর্ম প্রকাশ পায়। ফলে তিনি দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। সৈয়দ আফ্রিদি বলেন, ‘ইন্টারনেটে নিজের কাজের ছবি দেখলে মনটা আনন্দে ভরে ওঠে।’ তিনি জানান, ‘এবার আমি নবী করীম সা.র সব নাম-উপাধি পাথরে খোদাই করব।’