পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শনিবার পার্ক সার্কাসের ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের অডিটোরিয়ামের মাইশাত ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। এ দিনের ওয়ার্কশপের সহযোগিতায় ছিল তারবিয়া কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সং’্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক, সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, ছিলেন মাইশাত ফাউন্ডেশনের অন্যতম কর্তা দানিশ রিয়াজ, তারবিয়া কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কর্ণধার আজিজুর রহমান, আইনজীবী মাসুদ করিম, বঙ্গীয় ইমাম পরিষদের আবদুল রহমান মোল্লা, আকরাম হক প্রমু’। এদিন উপস্থিত ছাত্রীদের একাংশ ইংরেজিতে কুরআন শরীফ পাঠ করে এবং ব্যাখ্যা করে।
মাইশাত ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে দানিশ রিয়াজ এই বাংলাতেও ইমামদের মর্যাদাপূর্ণ আয় বৃদ্ধিতে ওয়ার্কশপ পরিচালনা করছেন। এর আগে মালদায় ইমামদের নিয়ে এই ধরনের একটি ওয়ার্কশপ হয়েছে।
কলকাতার ওয়ার্কশপে উপস্থিত ইমামদের উদ্দেশ্যে আহমদ হাসান ইমরানের পরামর্শ, মুসলিম সমাজে ইমামদের বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু বাংলায় ইমামদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই ইমামদের ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কিছু পেশার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, ইমামদের আয় এত কম যে, তাতে নিজের ভরনপোষনই মুশকিল। পরিবারের জন্য তাঁরা কিছুই অবদান রাখতে পারেন না। ইমরান বলেন, ইমামদেরও স্বনির্ভর করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কোনও কাজই ছোট নয়। ইসলামেও আল্লাহ-র নবী সা. ব্যবসাকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। ইমরান বলেন, বাংলাদেশে ইমামদের বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিংয়ের জন্য ইসলামি ফাউন্ডেশনের অ্যাকাডেমি রয়েছে। এখানেও ইমামদেরকে ছোট ব্যবসা, গরু-ছাগল ও মুরগির অসুখ হলে তাদের চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ, বয়স্কদের জন্য রাতে শিক্ষা প্রদান কর্মসূচি ও আরও অনেক কাজ করা হয়। মাইশাত ফাউন্ডেশন ইমামদের চায়ের প্যাকেট বিক্রি, খেজুর, আতর, টুপি ইত্যাদির ব্যবসা করতে পথ দেখাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমকেও ইমামদের স্বনির্ভর প্রশিক্ষণের জন্য সংখ্যালঘু কমিশন প্রস্তাব দেবে। ইমামদের ইজ্জত বৃদ্ধি পেলে ইসলামের সম্মান বাড়বে। ইমামদের মর্যাদা বাড়লে সমাজ উন্নত হবে। তিনি আরও বলেন, ইউনিসেফ বিভিন্ন এনজিও-র মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা, পোলিও দূরীকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইমামদের সহযোগিতা নেয়। কিন্তু বিনিময়ে ইমামরা কিছুই পায় না।
মাইশাত ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দানিশ রিয়াজ বলেন, মূলত শিক্ষাক্ষেত্রে সারাদেশে কাজ করে এই সংস্থা। এবার এ রাজ্যের ইমামদের আর্থিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কাজ করবে মাইশাত। তাঁর মতে, ইমামরাও যাতে ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, সে-ব্যাপারে সহযোগিতা করা হবে।
তারবিয়া কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, শিল্পপতি ও সমাজসেবী আজিজুর রহমান বলেন, অল্প পুঁজিতে ইমামদের কীভাবে স্বনির্ভর করানো যায়, তার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে মাইশাত ফাউন্ডেশন এবং তারবিয়া কেমব্রিজ স্কুল কর্তৃৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে জেলায় জেলায় ইমামদের ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা হবে।
আইনজীবী মাসুদ করিম বলেন, হতাশা না বাড়িয়ে কিছু করতে হবে। বহু ইমাম রয়েছেন, তাঁদের সংসার চলে না। ইমামদের নিয়ে কাজ করলে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হবেন ইমামরা। এতে সমাজের উন্নয়ন ঘটবে।