পুবের কলম প্রতিবেদক: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র থেকে কাউন্টিং সেন্টার সরানোর প্রস্তাব দিল রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতরের সঙ্গে স্বীকৃত রাজনীতিক দলের বৈঠকে তৃণমূলের বিরোদ্ধে একঝাঁক অভিযোগ জানাল বিজেপির নেতৃত্ব। এদিন গোলপার্কের সার্কিট হাউস বেদি ভবনে রাজনীতিক দলের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতর। বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস বৈঠকে যোগ দেন। বিজেপির পক্ষ থেকে শিশির বাজোরিয়া, অভিজিৎ দাস এবং একতা মজুমদার হাজির ছিলেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উর্বশী ভট্টাচার্য এবং বাম নেতৃত্ব এদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে হাজির ছিলেন। বৈঠকে এদিন সমস্ত স্বীকৃত রাজনীতিক দলগুলিকে পরবর্তীতে নির্বাচনী আচরণ বিধি ও নিয়মাবলী থেকে অবগত করা হয়। অন্যদিকে ইভিএম ব্যবহারের কার্যবিধির সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দিল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতরের আধিকারিকরা। এদিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব বৈঠকে না থাকলেও একজন ডেপুটি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং দুজন অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন।
এদিনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস। তাঁর দাবি, তাঁরা ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে কাউন্টিং সেন্টার সরানোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের আপ্তসহয়াক সুমিত রায়ের ভোটের তালিকায় দুজায়গায় নাম ছিল। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাতগাছিয়া থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, একজন সাংসদের আপ্তসহয়ক হয়ে কি করে সুমিত রায়ের দুজায়াগ নাম ছিল। সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি তুললেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস। অন্যদিকে বিজেপির সহ সভাপতি শিশির বাজোরিয়া বলেন, প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এই ধরনের কর্মশালা হয়ে থেকে। তবে তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন যখন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্বাচন পরিচালনা করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে রাজ্যজুড়ে ১৬ লক্ষ ৯১ হাজার ১৩২ জন ভুয়া ভোটার রয়েছে। এটা কি করে হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শিশির বাজোরিয়া।
শিশির বাজোরিয়ার দাবি, তাদের যা অভিযোগ আছে তা আগামী ৪ মার্চ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে জানানো হবে।
অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ফিরহাদ হাকিম জানান, নির্বাচনের কিছু নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে। সেটাই আজকে বৈঠকে সমস্ত দলকে জানানো হল। তিনি আরও বলেন, আজ সমস্ত জেলাতেই এই ধরনের বৈঠক হয়েছে। যেখানে কাউন্টিং সেন্টারের কিছু নিয়মের পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। তাঁদের কিছু প্রশ্ন ছিল সেই প্রশ্নগুলি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর নোট করেছে। ফুল বেঞ্চ আসার পর তাঁদের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, আগামী ৩ মার্চ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্য আসছে। তার জন্য এখন থেকেই কোমর বেঁধে প্রস্তুত সমস্ত রাজনীতিক দল। বলাই বাহুল্য ডান, বাম থেকে নিয়ে শাসক দল সবার পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ এবং প্রস্তাব যে জমা পড়বে তা বোঝাই যাচ্ছে।