পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: স্কুলছাত্রীদের হিজাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব তুলে তীব্র সমালোচনা ও বিরোধিতার মুখে পড়েছে ডেনমার্কের ক্ষমতাসীন দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। সরকারের তরফ থেকে গঠিত ‘ফরগটেন উইমেনস স্ট্রাগল’ কমিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবের পরই এই সমালোচনা ও তীব্র প্রতিবাদ। গত ২৪ আগস্ট কমিশন ৯টি প্রস্তাব পেশ করে। তার মধ্যে একটি হল, বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধের আবেদন। কমিশন মনে করে বিদ্যালয়ে হিজাব পরিধান ছাত্রীদের মধ্যে দু’টি গ্রুপ, অর্থাৎ ‘আমরা এবং তারা’র সংস্কৃতি তৈরি করতে পারে। একইসাথে কমিশন ওই সুপারিশে সংখ্যালঘু পরিবারে শিশুর লালন-পালনে আধুনিক পদ্ধতির প্রচার এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যৌন শিক্ষা জোরদার করার প্রস্তাব করেছে। এই হিজাব নিষিদ্ধের বিষয়টি সামনে আসতেই ডেনমার্কে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। মুসলিমরা পথে নেমে এসেছেন। আরহাস ইউনিভার্সিটির ড্যানিশ স্কুল অফ এডুকেশনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আর্ম খাঁজা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘মুসলিম ছাত্রীদের নিয়ে যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, হিজাব নিষিদ্ধের মাধ্যমে তা কখনও সমাধান হবে না।’ প্রফেসর আর্ম খাঁজা বলেন, ‘হিজাব নিষিদ্ধ হলে মুসলিম ছাত্রীরা আরও বড় সমস্যায় পড়বে। কেন-না, তারা শৈশবেই নেতিবাচক সামাজিক নিয়ন্ত্রণের শিকার হবে।’ অধ্যাপক আর্ম খাঁজার বক্তব্যকে সমর্থন করেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান লন জোর্গেনসন। তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হল— সবার জন্য একটি সুন্দর বিদ্যালয় বানানো, যেখানে সবার সমান অধিকার। কমিশনের প্রস্তাব এমন একটি আইনি বাধা তৈরি করবে, যাতে শিশুরা ফেঁসে যাবে।’
হিজাব নিষিদ্ধের এই প্রস্তাবের বিরোধিতায় ২৬ আগস্ট ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের সড়কে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। এদের বেশিরভাগ ছিলেন নারী। প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা বলেন, এ প্রস্তাব বাতিল করা হোক।’ ৩৬ বছর বয়সি লামিয়া প্রতিবাদে অংশ নেন। তার স্লোগান ছিল— ‘আমাদের হিজাব থেকে হাত সরাও।’ ‘ডেনমার্কের প্রতিটি সেক্টরে হিজাবি নারীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। তারা ডেনমার্কের অংশ’ যোগ করেন লামিয়া। তিনি আরও জানান, তার ছোট্ট মেয়ে স্বেচ্ছায় হিজাব পরে। ‘হিজাবের সম্পর্ক হৃদয়ের সঙ্গে’ বলে মনে করেন লামিয়া।