পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দেশের মধ্যে কঠিনতম পরীক্ষা। আইএএস, আইপিএস, আইআরএস হওয়ার জন্য ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। ২০২৩ সালের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়ে এক সপ্তাহ আগে। বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে কোচিং নিয়ে কতজন সফল হয়েছেন, কোন সেন্টার বা বিশ্ববিদ্যালয়য় কোচিং দিয়ে অগ্রনী এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এমনকি নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা কীভাবে ইউপিএসসি ক্রাক করেছে সেসব সংবাদও প্রকাশ হচ্ছে।
তবে কাশ্মীরের যুবক মুহাম্মদ হারিস মিরের সাফল্য নজর কেড়েছে সব মহলের। হারিস মির প্রথমবার পরীক্ষায় বসেই সফল এবং তিনি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হননি বা কোনও সেন্টারের কোচিং-এর সাহায্য নিতে পারেননি। অর্থাৎ নিজের চেষ্টায় ইউপিএসসিতে সফল হয়ে অবশ্যই বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। সম্ভবত এ বছর সবচেয়ে কম বয়সি ইউপিএসসির সাফল্যদের মধ্যে, হারিস মিরের র্যাংক ৩৪৫। দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া থেকে এলএলবি ৫ বছরের ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করেছে। জামিয়া অবশ্য বিনা খরচে ইউপিএসসি কোচিং-এর ব্যবস্থা করেছে কিন্তু হারিস সেই কোচিং সেন্টারে ভর্তি না হয়ে নিজে স্টাডি করার সিদ্ধান্ত নেয়। তার এই সাফল্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে জানান প্রথমে আমি উদ্বুদ্ধ হই এই পরীক্ষায় কাশ্মীরের বহু ছেলের সাফল্য দেখে।
এই কঠিন পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য বহু কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীদের পরিশ্রম ও সফল হওয়ার ঘটনা আমাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমার বাবা একজন চিকিৎসক, শ্রীনগর মেডিকেল কলেজে রয়েছেন। আমি চিকিৎসক হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে পারতাম। কিন্তু ১০ম শ্রেণি থেকেই আমার মধ্যে আইএএস হওয়ার বাসনা দানা বাঁধে। সেজন্য একাদশ-দ্বাদশে হিউম্যানিটিজ নিইz। তারপর প্রশাসনে সুবিধা হতে পারে এবং ইউপিএসসিতে কাজে লাগতে পারে এই ভেবে দিল্লি চলে আসি ল’ পড়ার জন্য। জামিয়াতে ভর্তি হই।
আর্থিক অনটন ছিল না তবে ঘরবাড়ি ছেলে দিল্লিতে পাঁচ বছর পড়ে থাকা নিয়ে অবশ্যই মন খারাপ থাকত। কিন্তু কঠিন পরীক্ষার কথা ভেবে নিজেকে কঠিনভাবে তৈরি করার বাসনাও চেপে বসে। ‘সেল্ফ স্টাডি’ আমার কাছে নিজস্ব টার্ম, কোচিং নিলে হয়তো সুবিধা হতো কিন্তু বিনা কোচিং-এ সফলতা আমার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল। যারা এই কঠিন পরীক্ষায় বসতে চান তাদের জন্য বলব সিলেবাস ধরে পড়ার অভ্যাস ভালো আর একটি বিষয়ের জন্য একটি সিরিজের ম্যাটেরিয়ালস-এর উপর ভরসা রাখতে হবে। এক বছরের ধারাবাহিক ও কঠোর পরিশ্রম অবশ্যই সাফল্য নিয়ে আসবে। হারিস মির এখন অপেক্ষায় রয়েছে তার সার্ভিস এলটমেন্ট-এর প্রক্রিয়া শেষে কাজে যোগদানের চিঠি পাওয়ার জন্য।