কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হামেশায় লক্ষ্য করা যায়। আর এতে বিপাকে পড়তে হয় সংশ্লিষ্ট দফতরকে। মাধ্যমিকের মতো এবার প্রশ্নফাঁস রুখতে আরও কড়া হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। মাধ্যমিকের মত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, গোটা ব্যবস্থাটি পরিচালিত হবে প্রতিটি প্রশ্নপত্রে থাকা একটি করে ইউনিক কোডের মাধ্যমে। ঠিক যেভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক বা চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে থাকে। সংসদ সভাপতি বলেন, পরীক্ষা ব্যবস্থার শুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য আমরা প্রশ্নপত্রে সিরিয়াল নম্বর করেছি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স-সহ দেশের সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষায় সেটা থাকে। এটা সিকিউরিটি ফিচারের একটা অংশ।
উচ্চমাধ্যমিকে ৬০টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে সিরিয়াল নম্বর রাখা হচ্ছে ১৪টি বিষয়ে। এছাড়া রাখা হচ্ছে এনক্রিপটেড কিউআর কোড অথবা বারকোড। সংসদের কর্তারা নিজস্ব ব্যবস্থায় সেই বারকোড বা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে। প্রশ্নপত্রের ইউনিক সিরিয়াল নম্বর। সংসদ সভাপতি আরও জানিয়েছেন, ওই ১৪টি বিষয়ের ক্ষেত্রে কোন পরীক্ষাকেন্দ্রে কত সিরিয়াল নম্বর থেকে কত সিরিয়াল নম্বরের প্রশ্নপত্র যাচ্ছে তা সংসদের রেকর্ডে থাকবে। আবার পরীক্ষাকেন্দ্রের একটি রুমেও কত থেকে কত সিরিয়াল নম্বরের প্রশ্নপত্র যাচ্ছে তাও জানা থাকবে সংসদের। ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় একেবারে নতুন একটি ব্যবস্থা নিচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। যে ব্যবস্থায় একটিও প্রশ্নপত্র মিসিং হলে অথবা প্রশ্নপত্রের ছবি পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ছড়িয়ে পড়লেই সংসদের কর্তারা বুঝে যাবেন রাজ্যের কোন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে, পরীক্ষাকেন্দ্রের কোন ঘর থেকে প্রশ্নপত্রটি বেরিয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বিজনেস স্টাডিজ, ভূগোল, অ্যাকাউন্ট্যান্সি, ইতিহাস, সংস্কৃত-সহ মোট ১৪টি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে থাকবে সিরিয়াল নম্বর-সহ অন্যান্য সিকিউরিটি ফিচার্স। এই ১৪টি বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সময় কোন সিরিয়াল নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন, তা পরীক্ষার্থীকে উল্লেখ করতে হবে নিজের উত্তরপত্রে।
চিরঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, উত্তরপত্রে সিরিয়াল নম্বর লেখার জায়গা থাকবে। যে বিষয়গুলির প্রশ্নপত্রে সিরিয়াল নম্বর থাকবে, সেগুলির ক্ষেত্রে ওই নির্ধারিত জায়গায় ছয় অথবা সাত নম্বরের ওই কোডটি লিখতে হবে পরীক্ষার্থীদের। যে বিষয়গুলির প্রশ্নপত্রে সিরিয়াল নম্বর থাকবে না, সেগুলির ক্ষেত্রে ওই জায়গা ফাঁকা রেখে দিতে হবে। জানা গিয়েছে, পরীক্ষার ‘অ্যাটেন্ডেন্স অ্যান্ড সিগনেচার রেজিস্ট্রার’-এও কোন পরীক্ষার্থী কোন সিরিয়াল নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন, তার উল্লেখ করতে হবে। যা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব বর্তাবে ইনভিজিলেটরের উপর।