পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নয়া সংসদে হঠাৎ হলুধ ধোঁয়ায় ফিরে এল ২০০১ সালের জঙ্গি হামলার আতঙ্ক। বুধবার সংসদে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন হঠাৎ করে দর্শকাসন থেকে লাফ দিয়ে পড়েন দুজন আগুন্তুক। তারা প্রথমে সারিতে বসেছিলেন। সেই সময় মালদা উত্তরের বিধায়ক খগেন মুর্মু জিরো আওয়ারে তার বক্তব্য রাখছিলেন।
ঠিক সেই সময় দুপুর ১২.৫৬ মিনিট নাগাদ অতর্কিতে দর্শকাসন থেকে প্রথমে লাফ দিয়ে পড়েন একজন। সংসদে থাকা সাংসদরা ভেবেছিলেন দর্শক হয়তো পড়ে গিয়েছেন। কিন্তু তার পরক্ষণেই অপর একজন লাফ দিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে জুতো বা মোজার মধ্যে থেকে একটি স্মোক স্ক্যান বের করে সংসদ ভবনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাংসদরা সংসদের বাইরে বের হয়ে আসেন।ভিতরে ছিলেন রাহুল গান্ধি। তাকেঁ বের করে আনা হয়। বেরিয়ে আসেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। ঘটনায় প্রথম সংসদের ভিতর থেকে দুজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তার বাইরে থেকে পরিবহন চত্বরের সামনে থেকে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, ভিতর থেকে পাকরাও করা দুজনের নাম সাগর শর্মা ও মনোরঞ্জন। দুজনেই মহিশূরের বিজেপি সাংসদের প্রতাপ সিংয়ের পাস নিয়ে ভিতরে ঢুকে ভিজিটরস আসন বা দর্শকাসনে বসেছিলেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই পরিবহন ভবনের সামনে থেকে নীলম বলে এক মহিলা সহ অমল বলে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, ধৃত অমল পুণে বাসিন্দা, সাগর লখনউ, মনোরঞ্জন কর্নাটকের ও নিলম হরিয়ানার বাসিন্দা ঝিন্দের বাসিন্দা। নীলম কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জানা গেছে, ধৃতরা সরকারের বিরুদ্ধে দেশে বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সংসদে আজ জঙ্গি হানার ২২ বছরে পূর্তির দিনে ফিরে এল জঙ্গি হানার আতঙ্ক। সেদিনও সংসদে অধিবেশন চলছিল। সে সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী, বিরোধী দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধি। ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠী জেকেএলএফের প্রাক্তন সদস্য আফজল গুরু, তার ভাই শৌকত হুসেন গুরু, শৌকতের স্ত্রী আফসানা গুরু সহ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষার অধ্যাপক এসএসআর গিলানি। পরে আফসানার গুরুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আরএআর গিলানির মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হলেও ২০০৫ সালে শীর্ষ আদালত তার সেই সাজা মকুব করে দেয়। ২০১৩ সালে আফজাল গুরুর ফাঁসি হয়।
প্রশ্ন উঠেছে, সংসদের মতো জায়গায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আজ ২২ বছরে জঙ্গি হামলার পূর্তিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও যেখানে জোরদার, আঁটোসাঁটো সুরক্ষিত হওয়া উচিত ছিল সেখানে কিভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। বেকারত্ব নিয়ে সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে ধৃতরা।
জানা গেছে ভিজিটরস আসনে বসার জন্য একটি অনুমতি পত্র বা পাসের প্রয়োজন হয়। এর পর সংসদে প্রবেশের সময় তাদের আইডেন্টটি কার্ড আনতে বলা হয়। এমনকি জলের বোতল নিয়েও ভিতরে যাওয়ার অনুমতি নেই। সেখানে কিভাবে এত বড়সড় ঘটনা ঘটল? প্রশ্নের মুখে দেশের নিরাপত্তা।