পারিজাত মোল্লা: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে। আদালত সুত্রে প্রকাশ, ‘নিজ বাড়িতে একাই ছিলেন বৃদ্ধা। পাঁচজন দুষ্কৃতী মিলে তাঁকে পুড়িয়ে মারেন’, এমনই অভিযোগ ওঠে মুর্শিদাবাদে। সেই ঘটনায় কেন এফআইআর দায়ের করল না পুলিশ? এদিন এই প্রশ্নই তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। প্রথমে হুমকি, পরে খুনের মতো অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র অভিযোগ দায়ের করেই থেমে গেল সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ! মামলাকারী আইনজীবীর কাছ থেকে এই অভিযোগ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি।
মুর্শিদাবাদের এক বাসিন্দার (প্রাক্তন সিআরপিএফ জওয়ান) মায়ের মৃত্যু নিয়ে এই মামলা হয়। ঘটনার তদন্ত নিয়ে রাজ্য পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাইল সিঙ্গেল বেঞ্চ। এদিন এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রাজ্যের আইনজীবী কে প্রশ্ন করেন, ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা তো ছিল। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে এফআইআর দায়ের করল না কেন?’
সিআরপিএফ-এর প্রাক্তন জওয়ান প্রশান্ত মল্লিক মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। বছর কয়েক আগে কর্মক্ষেত্রে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯০ শতাংশ শারীরিক সক্ষমতা হারান তিনি। গত ২৫ অক্টোবর দুর্গাপূজার সময় প্রশান্ত মল্লিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা। এরপর দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। প্রশান্ত এবং তাঁর পরিবারের লোকদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছিল। হুমকির জেরে প্রশান্ত মল্লিকের মা ছাড়া বাড়ির বাকি সবাই অন্যত্র থাকতে শুরু করেন। গত ২৫ নভেম্বর মৃত্যু হয় প্রশান্ত মল্লিকের মায়ের। অভিযোগ ওঠে, ওই দিন ভোরে তাঁদের বাড়িতে ৫ জন হামলা চালায়। দীপালি মল্লিককে পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
পাঁচ অভিযুক্তের নাম মুক্তালাল মণ্ডল, বামদেব মণ্ডল, সুরজিত্ মণ্ডল, বিশ্বজিত্ মণ্ডল এবং রণজিত্ মণ্ডল। আগামী ১৮ ডিসেম্বর তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। পেশ করতে হবে কেস ডায়েরি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের তরফে পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকায় যাতে আইন-শৃঙ্খলা ব্যহত না হয়, তার জন্য পুলিশকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আগামী সপ্তাহে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।