পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক:
তেলেঙ্গানায় মুসলিম ভোটিং প্যাটার্নে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন কংগ্রেসকে তেলেঙ্গানা রাজ্যে জয়লাভ করতে সাহায্য । সে রাজ্যে ৩.০৬ কোটি জনসংখ্যার ১৩%এর বেশি মুসলিম, রাজ্য বিধানসভার ১১৯টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪৫টিতে মুসলিম ভোটারদেরই প্রাধান্য ছিল।
তেলেঙ্গানা মুসলিম অর্গানাইজেশনের জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির (জেএসি) সিদ্ধান্তের কারণে মুসলিম ভোটের ঝোঁক ছিল মূলত কংগ্রেসকে শর্তসাপেক্ষ সমর্থনের প্রস্তাব। জেএসি, সেই অনুযায়ী রাজ্যের সমস্ত মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল।জেএসি-র রাজ্যের আহ্বায়ক সৈয়দ সেলিম পাশা মাত্র এক সপ্তাহ আগে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে এই সিদ্ধান্তটি ক্ষমতায় আসার ছয় মাসের মধ্যে সংখ্যালঘুদের ঘোষণাপত্রে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য কংগ্রেসের উপর চাপ সৃষ্টির একটি হাতিয়ার হিসাবে কাজ করবে,” । ৩০ নভেম্বর সে রাজ্যে ভোট হয়।
পাশা বলেছেন, যে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতি মুসলমানদের সমর্থন মুসলিম সম্প্রদায়ের অগ্রগতি এবং দেওয়া প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভর করবে।
মুসলিমরা মাহবুবনগর, হুজুরনগর, ওয়ারাঙ্গল ইস্ট, খাম্মাম, বোধন, ইব্রাহিমপত্তনম, শাদনগর, রামাগুন্ডম, নিজামবাদ গ্রামীণ এবং নলগোন্ডা কেন্দ্রে ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির (বিআরএস) বর্তমান বিধায়কদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে বলেই কংগ্রেসের পক্ষে ভাল ফল হয়েছে।কংগ্রেস এবং বিআরএসের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের মধ্যে বিজেপি আটটি আসন পেতে সক্ষম হয়েছে।
কর্ণাটকে যেভাবে মুসলিম ভোটাররা কংগ্রেস দলকে ক্ষমতায় আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তেলেঙ্গানাতেও তেমনটা হওয়ার বিষয়ে আশা ছিল কংগ্রেসর। সে আশা মিলেছে।
‘মিম’ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কয়েকটি ধর্মীয়-সামাজিক মুসলিম সংগঠনের মঞ্চ ‘মুসলিম ইউনাইটেড ফোরাম’ রাজ্যে ক্ষমতাসীন ‘বিআরএস’কে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। অন্যদিকে, ‘জমিয়তে উলামা’ এবং ‘তেহরিক-ই-মুসলিম শাব্বান’-এর মতো কিছু সংগঠন কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর এবং তার ছেলে বিআরএস-এর নির্বাহী সভাপতি কেটিআর ভোটের প্রচারে উর্দুতে বক্তব্য রেখেছিলেন।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী মুহাম্মদ আলির দাবি ছিল- সংখ্যালঘুদের জন্য কিছুই করেনি বিআরএস। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের অভিযোগ- বিআরএস এবং মিমের সঙ্গে বিজেপির গোপন বোঝাপড়া রয়েছে। বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ করতে মিমের বড় ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ ছিল কংগ্রেসের।
এবারের নির্বাচনে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং প্রাক্তন সাংসদ মুহাম্মদ আজহারউদ্দিন কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন।কিন্তু তিনি জুবিলি হিলস বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন। রাজ্যটিতে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এবং মুহাম্মদ আজাহারউদ্দিন জয়ী হলে তাকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছিল।
এদিকে, মুসলিম ভোটের দাবিদার বিভিন্ন দলের বাস্তবতা হচ্ছে জনসংখ্যা অনুযায়ী কেউ প্রার্থী দেয়নি। ‘মিম’ দল ছাড়া বড় দলগুলোর তালিকায় মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা খুবই কম। কংগ্রেস মাত্র পাঁচটি টিকিট দিয়েছিল আর বিআরএস দিয়েছিল মাত্র তিনটি।বিজেপি কোন মুসলমানকে টিকিট দেয়নি। জনসংখ্যা অনুসারে, অবশ্য মুসলমানদের কমপক্ষে ১৭টি টিকিট পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিকমহল।বাস্তবে তা হয়নি ।