পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গাজার উত্তর অংশে ব্যর্থ হয়ে ইসরাইল সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা কাসাম বিগ্রেড। ইসরাইলের অভিযানকে ‘ব্যর্থ’ উল্লেখ করে কাসাম ব্রিগ্রেড জানিয়েছে, উত্তর গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ৭০ ভাগই এখন চলে গেছে। হামাসের এই দাবির কথা স্বীকার করেনি ইসরাইল। তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযানের মাত্রা বাড়িয়েছে। সেখানকার বড় শহর খান ইউনুসে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে দখলদার সেনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ গাজায় হামলা চালালেও ইসলামি যোদ্ধাদের প্রতিরোধের কারণে সুবিধা করতে পারছে না ইহুদি সেনাবাহিনী। তাই উত্তরের মতো দক্ষিণ গাজা থেকেও হয়তো ইসরাইলের স্থলবাহিনীকে পিছু হটতে হতে পারে। ইসরাইলি সেনা পরিচালিত রেডিয়োয় বলা হয়েছে, ইসরাইল খান ইউনুসের উত্তরে স্থল অভিযান শুরু করেছে।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (আইডিএফ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি সেনাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আগে আমরা উত্তর গাজায় জোরালো ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লড়াই করেছি। এখন দক্ষিণ গাজায় তা করা হচ্ছে।’ এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলকে যুদ্ধের আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিদেশনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা পুনরায় শুরু করার জন্য ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেছেন তিনি।
কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরাইল-গাজা যুদ্ধে যে এক সপ্তাহের বিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি গত শুক্রবার শেষ হয়। এরপর গাজায় আবারও বোমা হামলা শুরু করে ইসরাইল। ৭ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ইসরাইলি কারাগার থেকে ২৪০ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন। বিনিময়ে হামাস ১১০ জন জনকে মুক্তি দিয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হাজার হাজার উদ্বাস্তু দক্ষিণাঞ্চলে এসে আশ্রয় নেয়। এসব উদ্বাস্তুদের মধ্যেই হামাসের সদস্যরা লুকিয়ে রয়েছে বলে দাবি ইসরাইলের। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় প্রায় দশ হাজার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। গত কয়েকদিনে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের হামলা ও এর ফলে সেখানকার হাসপাতাল গুলোর অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। খান ইউনুসের নাসের মেডিকেল হাসপাতালকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউনিসেফের কর্মকর্ত জেমস এল্ডার। গাজায় ইসরাইলে বর্বর আগ্রাসনে এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।