পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি সহ ‘সেলফি পয়েন্ট’ স্থাপন করার জন্য কলেজ সহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে প্রস্তাব দিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, ইউজিসি। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে আগে এই নির্দেশিকা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাস অথরিটিকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, কলেজ পড়ুয়া সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের মোদির ছবির সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য উৎসাহিত করতে। সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে শেয়ার করার কথাও বলা হয়েছে। এই নির্দেশ কার্যত বিজেপির ভার্চুয়ালি প্রচার বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
দেশের প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সেলফি পয়েন্ট তৈরি করতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন সংস্থার সচিব মণীশ যোশী। তাতে বলা হয়েছে, ভারতের অভূতপূর্ব উন্নতির সঙ্গে তরুণ সমাজ, বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনকে যুক্ত করতে এই সিদ্ধান্ত। ইউজিসি তাদের এই প্রস্তাবের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে জানিয়েছে, ভারত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। সম্মিলিতভাবে গর্ববোধকে লালন করতেই এই সিদ্ধান্ত।
মণীশ যোশী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি থেকে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণা নিয়ে যুবকদের শক্তি এবং উদ্দীপনাকে কাজে লাগানোর একটি অনন্য সুযোগ রয়েছে। ‘সেলফি পয়েন্ট’-এর লক্ষ্য হল বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অর্জন, বিশেষ করে জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর অধীনে নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে যুবকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।
ইউজিসি সেলফি পয়েন্টের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের পরামর্শ দিয়েছে। প্রতিটি নকশা একটি নির্দিষ্ট থিমের ওপর ভিত্তি করে হবে। যেমন ‘শিক্ষার আন্তর্জাতিকীকরণ,’ ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’, ‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন,’ ‘ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা,’ ‘বহুভাষাবাদ এবং উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনে ভারতের উত্থান’। থ্রিডি লে আউটের মাধ্যমে এই সেলফি পয়েন্ট তৈরি করা হবে। একটি বড় প্রতিষ্ঠানের এক ফ্যাকাল্টি মেম্বার বলেন, বিজেপির প্রচারণা ছাড়া এগুলি আর কিছুই নয়। সরকার বা ইউজিসিকে অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই ধরনের প্রচার করতে বলার জন্য আইনে কোনও বিধান নেই। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ভোটারদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দোরগোড়ায় ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। বিজেপি বহু আগে থেকেই তার ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। চন্দ্রযানের সফল উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে দেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য যে বিজেপি সরকারের আমলেই হয়েছে, প্রচারে গিয়ে সে কথা জানিয়ে দিতে কসুর করেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের নেতা- মন্ত্রীরা। শিক্ষাক্ষেত্রেও এবার সেই দেশের সাফল্যকে হাতিয়ার করে প্রচারে নামতে চাইছে বিজেপি। আর প্রায় কমবেশি সব কিছুতেই ‘মোদির ছবি’ বা কাট আউট দিয়ে সেই সাফল্যকে আরও অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। কোভিড সার্টিফিকেটেও মোদির ছবি রাখা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।