নয়াদিল্লি, ২ ডিসেম্বর: এবার দেশের জাতীয় রাজধানীতে আক্রান্ত মণিপুরের ৪জন। তাদের মধ্যে ২জন মহিলাও রয়েছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির সানলাইট কলোনিতে ঘটনাটি ঘটেছে। কলোনির একটি রাস্তায় ৪জন মণিপুরিকে নিগ্রহ করে। তাদের মধ্যে ২জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা ছিল। ঘটনাটি রাস্তার পাশের কোনও বাড়ির একটি বারান্দা থেকে কেউ মোবাইলে ভিডিয়ো করেন। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এই বিষয়ে সানলাইট কলোনির এক পুলিশ আধিকারিক জানান, শুক্রবার রাতে বেশ কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে এফআইআর দায়ের করার পর এক অভিযোগকারী সাংবাদিকদের বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দুই অভিযুক্তের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এদিকে, যে ভিডিয়ো ফুটেজটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্তদের দলটি মণিপুরের চারজনকে নাগাড়ে ঘুষি, লাথি মারছে এবং একটি সরু রাস্তায় জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। দাবি করা হচ্ছে, হামলাকারীরা কুকি জনজাতি গোষ্ঠীর। আর আক্রান্তরা মেইতেই গোষ্ঠীর। এই ঘটনা নিয়ে অনেকে বলছেন, মণিপুরের ঘটনার আঁচ এসে পড়েছে দিল্লিতে। জাতি বিদ্বেষ থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে।
আক্রান্ত এক মণিপুরি ব্যক্তি বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে খাওয়া দাওয়া করার পর রাত ১১টা নাগাদ আমি আমার স্ত্রী ও বোনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এক বন্ধুকে তার বাড়িতে ছেড়ে আসতে যাচ্ছিলাম। হেঁটেই যাচ্ছিলাম। সেইসময় দু’জন লোক ও এক মহিলা আমাদের কাছে এসে অনুরোধ করে, তাদের মোবাইলের ব্যাটারি শেষ হয়ে গিয়েছে। তারা মুনিরকা (দক্ষিণ দিল্লিতে) যাবে। কিন্তু ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্যাব বুকিং করতে পারছে না। তাই আমরা যদি আমাদের ফোন থেকে তাদের জন্য একটি ক্যাব বুক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিই। আমরা সাহায্য করতে রাজি হয়ে যাই। ক্যাব বুকিং করার সময়, যে লোকটি সাহায্য চেয়েছিল সে হটাৎই আমার স্ত্রী এবং বোনের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করতে শুরু করে। আমরা তাদের আচরণে আপত্তি জানাতেই তারা মারমুখী হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, এরপর হামলাকারীরা তাদের ৮-৯জন বন্ধুকে ডেকে আনে। তারাও আমাদের উপর হামলা করে।’
আক্রান্ত ওই ব্যক্তির স্ত্রীর অভিযোগ, ‘আমার চুল ধরে টেনে মাটিতে লাথি মেরে ফেলে দেওয়ার পর আমাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। আমার তখন মনে হচ্ছিল, আমি হয়তো আর বাঁচব না। ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে। আমরা সবাই হয়তো মরে যাব। কারণ তারা আমাদের মারধর করা বন্ধ করেনি। তারা আমাদের বেপরোয়া মারধর করছে দেখেও কেই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি।’ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে তারা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।