পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিধানসভায় পাস হয়ে যাওয়া বিল আটকে রাখা নিয়ে রাজ্যপালকে আগেই কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত রাজ্যপালদের সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, এভাবে বিল আটকে রাখা আগুন নিয়ে খেলবেন না।
তিনদিন আগে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে সতর্ক করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যপালকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল— মখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, কেন বিলে সায় দিচ্ছেন না। রাজভবন দিনের পর দিন বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত ফেলে রাখতে পারে না। শুক্রবার তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এন রবিকেও একই কথা বলল দেশের শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যেন বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে কোনও বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো যাবে না। কোন ধরনের বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি দরকার সংবিধানে তা বলা আছে। তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে আগেই বিল নিয়ে সতর্ক করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কী কারণে তিনি ১২টি বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত তিন বছর ফেলে রেখেছেন সে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরও তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ১০টি বিল ফের ফেরত পাঠান। বিধানসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিল স্বাক্ষর না করেই ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল আর এন রবি। এই ১০টি বিলের মধ্যে দু’টি বিল পূর্বতন এআইএডিএমকে সরকারের আমলে পাশ হয়েছিল। এরপর রাজ্যের স্ট্যালিন সরকার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে ফের বিলগুলিকে পাস করায়।
তারপর সেগুলিকে ফের রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয় অনুমোদনের জন্য। মনে করা হচ্ছে, রাজ্যপালের উপর চাপ তৈরি করতেই এটা করা হয়েছে। সাসকদল ডিএমকে’র মুখপাত্র সর্বাননের বক্তব্য, রাজ্যপাল কেন্দ্রের হাতের পুতুল হয়ে উঠেছেন।
বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল দীর্ঘদিন স্বাক্ষর না করে ঝুলিয়ে রাখছেন রাজ্যপাল, এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরলের মতো একাধিক অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য। তাদের প্রত্যেকের অভিযোগ, রাজ্যপাল বিজেপির কথামতো কাজ করছে। রাজ্যের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলি রাজ্যপালের বাধায় থমকে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, একাধিক ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গেও শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নিয়ে কম চর্চা হয়নি। জগদীপ ধনকর যখন রাজ্যপাল ছিলেন, সেই সময় রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সঙ্গে তাঁর সংঘাত নিয়ে একাধিকবার মিডিয়ায় খবরের শিরোণাম হয়েছে। তৃণমূল সাংসদরাও একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগও করেছিলেন।