পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: কথায় আছে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’। ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পরেও কোনোক্রমে প্রাণে বাঁচলেন ১৫০ শ্রমিক। সিকিম-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতীয় রেলওয়ের জন্য টানেল নির্মাণে কর্মরত ছিলেন তারা। তবে রাক্ষসরুপী তিস্তা তাঁদের গিলে খাওয়ার আগেই স্থানীয় একদল ব্যক্তি এসে উদ্ধার করে নেয় তাঁদের। জানা গেছে, আসন্ন বিপর্যয়ের কথা জানতে পেরেই শ্রমিকগুলিকে উদ্ধার করতে আসেন বেসরকারী নির্মাণ সংস্থার কর্মকর্তারা। সেই সময় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন তারা।
প্রেক্ষিতে শিবেন্দু দাস নামে এক শ্রমিক জানান, আমরা সকলে ঘুমাচ্ছিলাম। তিস্তা বা বিপর্যয়ের কথা টের পর্যন্ত পায়নি। তবে আজ আমাদের বাঁচাতে না এলে আমরাও তিস্তার তোড়ে তলিয়ে যেতাম। ভগবান আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে। আমরা ব্যাগপত্র গোছগাছ করে নিরাপত্তা স্থানে পৌঁছতেই দেখি তিস্তার প্রলয়ী রূপ। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমাদের ক্যাম্প। আজ আমাদের কিছু হলে স্ত্রী-সন্তানদের কি হত সেটাই ভাবছি। অজানা এক ভয় গ্রাস করেছে আমাদের সকলকে। সবাই চুপ করে গেছে। শুধু বাড়ি ফেরার আর্জি জানাচ্ছে। সকলকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে কৃতজ্ঞ আমরা। আমরা সকলেই অসম, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। হিন্দু-মুসলিম একত্রে কাজ করি। আজ প্রাণে বাঁচার পর যে যার মতো করে দুয়া, প্রার্থনা করে।
সূত্রের খবর, ভারতীয় রেলওয়ের সেভোকে-রাংপো প্রকল্পের জন্য পাঁচটি টানেল নির্মাণের জন্য কাজ করছেন তারা। যা হিমালয় রাজ্যকে দেশের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করবে।
ভয়াল প্রকৃতির রোষের মুখে শৈলশহর সিকিম। বিপর্যস্ত পাহাড়ি রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সাত সেনা-সহ ৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর। যার মধ্যে তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৯টি দেহ। নিখোঁজ শতাধিক। ২৪১৩ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো সম্ভব হলেও এখনও পর্যন্ত ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ। মঙ্গলবার কাকভোরে আচমকাই মেঘ ভাঙা বৃষ্টি নামে রাজ্যের লোনাক হ্রদে। লেক ফাটিয়ে হড়পা বান এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সংলগ্ন লোকালয়। রুদ্ররূপ ধারণ করে আপাত শান্ত তিস্তা। ছিন্নভিন্ন করে ১০ নং জাতীয় সড়ক সহ ১৪ টা সেতু। বিপর্যস্ত জনজীবন।