আবদুল ওদুদ: আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে পশ্চিমবাংলায় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা দেওয়ায় খুশির হাওয়া এপার বাংলার ভোজন রসিক মানুষদের মধ্যে। এপার বাংলার ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে রফতানির অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত বুধবার বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ অনুমোদন দিয়ে আমদানি ও রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ৭৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকে ৫০ টন করে রফতানির অনুমোদন পেয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও রফতানি দফতরের প্রধান মুহাম্মদ আবদুর রহিম খান বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশি ও বন্ধুপ্রতিম দেশ। তারা আমাদের বাণিজ্যের বড় অংশীদার। তাই, এবারও আসন্ন দুর্গাপুজোয় শুভেচ্ছা স্বরূপ সেদেশে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ইলিশ রফতানির আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে শর্ত সাপেক্ষে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত পরিমাণ ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ভারতকে ঢাকার ইলিশ দেওয়া প্রসঙ্গে ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষক এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য্য মনে করেন, ভারত এবং বাংলাদেশ একে অপরের বন্ধু। কাজেই ইলিশ প্রাপ্তি নতুন কিছু নয়। বাঙালির সবথেকে বড় উৎসবে বাঙালির তাতে ইলিশ পরবে না সেটা হয় না। তাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাঙালিদের পাতে ইলিশ পাঠিয়েছেন। আমি আশা করব এই ধরনের আদান-প্রদানের মাধ্যমে আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছাবে। তবে তিনি এও মনে করেন বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। শুধু পুজো নয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন এবং মুসলিমদের ঈদুল ফিতর এর সময়ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ আসুক এটাই আমি চাইব।
বাংলাকে ইলিশ দিলেই বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে কলকাতার আমদানিকারকদের। শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে, রফতানিকারকদের রফতানি নীতি ২০২১-২০২৪ এর বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে, শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রপ্তানির অনুমতি পাওয়া পণ্যের পরীক্ষা এবং প্রতিটি কনসাইনমেন্ট শেষে রফতানি সংক্রান্ত সব কাগজপত্র ই-মেইল করতে হবে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি রফতানি করা যাবে না।
প্রতিটি পণ্যচালান রফতানিকালে শুল্ক কর্তৃপক্ষ এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পরীক্ষা করে অনুমোদিত পরিমাণের অতিরিক্ত পণ্য রফতানি না করার বিষয়টি নিশ্চিত হবেন। রফতানির এই অনুমতির মেয়াদ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে সরকার মৎস্য আহরণ ও পরিবহণের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করলে তা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অনুমতির মেয়াদ শেষ হবে।
শর্তে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকার প্রয়োজনে যেকোনও সময় ইলিশ মাছ রফতানি বন্ধ করতে পারবে। এ অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং অনুমোদিত রফতানিকারক ব্যতীত সাব কন্ট্রাক্টে রফতানি করা যাবে না।