পারিজাত মোল্লা: সোম থেকে বুধ, পর পর তিনদিন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তোপের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ওএমআর শিট বিকৃত মামলায় বুধবার আদালতে কেস ডায়েরি জমা দেয় সিবিআই। যা দেখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তীব্র ভর্ত্সনা করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘সিবিআই আদালতের সঙ্গে খেলছে, মানুষকে বোকা বানাচ্ছে!’
গত বছরের ২৭সেপ্টেম্বর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপর প্রায় এক বছর অতিক্রম হতে চললেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই সেভাবে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি বলেই মনে করছে আদালত।
কেন্দ্রের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগ টাকার বিনিময়ে হয়েছে। অযোগ্য প্রার্থীরা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন তা জলের মতো পরিষ্কার। সিবিআইয়ের যে মনোভাব নিয়ে তদন্ত করা উচিত ছিল, সে ভাবে তদন্ত করেনি। যে কারণে আদালত আশাহত হয়েছে।’
এই সময় সিবিআই আধিকারিক ওয়াসিম আক্রম বিচারপতিকে বলেন, ‘টাকা লেনদেনের ঘটনায় আমরা চার শিক্ষককে গ্রেফতার করেছিলাম।’ বিরক্ত বিচারপতি সিবিআই আইনজীবীকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আপনারা গ্রেফতার করেছিলেন।’
ভর্ত্সনা করে বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, ‘সিবিআই আদালতের সঙ্গে খেলছে। আদালতের নির্দেশের পরও নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গোপন জবন্দন্দি নেয়নি সিবিআইয়ের ডেপুটি সঞ্জয় কুমার সভান।
‘সূত্রে প্রকাশ, ক্ষুব্ধ বিচারপতি এরপর সিবিআইয়ের উদ্দেশে বলেন, -‘নিয়োগ দুর্নীতি মামলার নিস্পত্তি করতে প্রয়োজনে বিশল্যকরণী খুঁজে নিয়ে আসব! এরপরই সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণ সুদকে আগামী ৪ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেদিন সিবিআইয়ের কর্ম দক্ষতার রিপোর্টও পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালত সূত্রে প্রকাশ, এদিন সিবিআই মোট ৮ টি ফাইলে কয়েক হাজার পাতার রিপোর্ট জমা দেয়। যা দেখে তীব্র ভর্ত্সনা করে ফের পুনরায় রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। আগামী ৪ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।