পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সংসদের বিশেষ অধিবেশনে কেন ডাকা হয়েছে স্পষ্ট করুক সরকার। এই দাবিতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধি। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সোনিয়া বলছেন, কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ কেন সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হল? স্পষ্ট করুক কেন্দ্র। চিঠিতে তিনি ৯টি বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই অধিবেশন ডাকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সোনিয়া।
বুধবার ৯ দাবি সম্বলিত সোনিয়ার চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। মোদিকে লেখা চিঠিতে প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী লিখেছেন, ‘সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে কোনও ধারণা বিরোধীদের কাছে নেই। শুধু জানানো হয়েছে ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন বসার কথা। এই ঘটনায় দেশের মানুষের কাছে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। কংগ্রেসের পাশাপাশি সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল অধিবেশনের যোগদান করতে ইচ্ছুক।’
সোনিয়া সংসদের ওই বিশেষ অধিবেশনে আলোচনার জন্য ৯টি ইস্যুও তুলে ধরেছে। তাঁর দাবি, মূল্যবৃদ্ধি মাথায় রেখে অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য এবং কৃষকদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে হবে । আদানি মামলায় যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি নিয়ে চর্চা করতে হবে । মণিপুরের পরিস্থিতিতে আলোকপাত করতে হবে । হরিয়ানার মতো রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তির আবহ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। চিনা আগ্রাসন নিয়ে সরকারের অবস্থান জানাতে হবে। দ্রুত জাতি সমীক্ষা নিয়ে কথা বলতে হবে। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোকপাত করতে হবে । বিভিন্ন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর বসতে চলেছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কী কারণে এই বৈঠক, তা স্পষ্ট করেননি সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। সোনিয়া গান্ধির এই আগাম চিঠি দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি। প্রহ্লাদ বলেছেন, আপনি অযথা এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে রাজনীতি করছেন। সংবাদসংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। পরদিনই গণেশ পুজো পড়েছে। সেদিন নয়া সংসদ ভবনে হবে সংসদের বিশেষ অধিবেশন।
কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এদিন বলেন, সংসদীয় ইতিহাসে এই প্রথম এজেন্ডা ছাড়া বসছে সংসদের অধিবেশন। মোদি সরকারের আমলে দেশের গণতন্ত্র যে ধ্বংস হচ্ছে, আলোচনা ছাড়াই বিশেষ অধিবেশন ডাকার ঘটনায় তা স্পষ্ট । সোনিয়ার মতো রমেশও গঠনমূলক আলোচনার দাবি করেছেন।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসের বৈঠকে স্থির হয়েছে, সরকার যে বিলই আনুক না কেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলি অধিবেশনে তোলা হবে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘সাধারণত বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে কর্মসূচি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য অনেক আগেই রাজনৈতিক দলগুলিকে দিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলে কর্মসূচি তৈরি হয়। অথচ ইন্ডিয়া-র দলগুলি যখন মুম্বইয়ে বৈঠক করছে, তখন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সতীর্থরা সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে বসলেন। এটা নজর ঘোরানোর চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।’’