পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: একেই বলে সঙ্ঘী টাচ! এক ছোঁয়ায় ইন্ডিয়া বদলে গেল ভারত-এ! জি-২০ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র ঘিরে হুলুস্থূলপড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল থেকে দেশের আমজনতার মধ্যে। বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’ নামে ত্রাস দেখেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিরোধী জোটের মোকাবিলা করতে দেশের নামই বদলে দিলেন? আর তা নিয়েই তোলপাড় জাতীয় রাজনীতির অন্দরমহল।
কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো নাম দিয়েছেন। ‘স্কিল ইন্ডিয়া’, ‘খেলো ইন্ডিয়া’…তারা (বিজেপি) ‘ইন্ডিয়া’ শধটিকে ভয় পায়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১ বলা হয়েছে ‘ইন্ডিয়া, দ্যাট ইজ ভারত’…সেই নাম কীভাবে মুছে ফেলা যায়?
৯-১০ সেপ্টেম্বর দিল্লির প্রগতি ময়দানে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ওই বৈঠকের নৈশভোজে দেশি-বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। সেই আমন্ত্রণপত্রকে ঘিরেই যত বিপত্তি। ওই আমন্ত্রণপত্রে প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে লেখা হয়েছে প্রেসিডেন্ট অফ ভারত। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হচ্ছে, আমন্ত্রণপত্রটি জারি করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে। বিরোধীরাও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
আচমকা এই পরিবর্তনের জেরে প্রশ্ন উঠতে কী কারণে হঠাৎ কী কারণে হঠাৎ নাম পরিবর্তন? এ বিষয়ে বিজেপিকে তুমুল আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে যে জি-২০-র নৈশভোজের যে আমন্ত্রণপত্র তাঁর কাছে পৌঁছেছে সেখানে প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়ার বদলে লেখা হয়েছে প্রেসিডেন্ট অফ ভারত। অর্থাৎ এখন থেকে সংবিধানের ১ নম্বর ধারা এখন এভাবে পড়তে হবে, একসময় ছিল ইন্ডিয়া। এখন হয়েছে ভারত। এটি হবে প্রদেশগুলির ইউনিয়ন। এবার দেশের ইউনিয়ন অব স্টেটও হুমকির সম্মুখীন।
এই ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ইন্ডিয়া নাম পরিবর্তন করে ভারত করছে। ইংরেজিতে আমরা বলি ইন্ডিয়া। এবং বলা হয় ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন। এবং হিন্দিতে আমরা বলি ভারত কি সংবিধান। আমরা সবাই ভারত বলি। এর মধ্যে নতুন কী আছে? কিন্তু ইন্ডিয়া নাম গোটা পৃথিবীতে চেনে। দেশের নাম হঠাৎ পরিবর্তন করার কী দরকার?
খাপ প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া’ নামের জোট গঠনের পর তারা দেশের নাম পরিবর্তন করছে। জোটের নাম বলে দেশের নাম বদলে দেবে? ধরুন বিরোধী জোটের নাম পাল্টে ভারত রাকা হয়, তাহলে কি আবার দেশের নাম বদলে দেবে ওরা? তারপর কি ভারতের নাম বিজেপি রাখা হবে? এতবড় দেশ, এত বছরের ইতিহাস, এত পুরনো সংস্কৃতি,। বিরোধী জোটের নামে ভোট কমে যাওয়ার ভয়ে দেশের নাম বদলে দিচ্ছে। দেশের ১৪০ কোটি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে ওরা।
জয়রাম রমেশের ট্যুইটের আধঘণ্টা পরে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও একটি ট্যুইটে লিখেছেন, ভারত প্রজাতন্ত্র, আনন্দিত এবং গর্বিত বোধ করছি। আমাদের সভ্যতা দ্রুত অমরত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
নাম পরিবর্তনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। তিনি বলেন, এখন বিজেপি ‘ইন্ডিয়া থেকে ‘ভারত’-এ পরিবর্তন করতে চায়…বিজেপি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ৯ বছর পর আমরা যা পেয়েছি তা হল নাম পরিবর্তন।