পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে প্রাথমিক শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলা।
এদিন স্কুলে পোস্টিং দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলায় সিবিআইয়ের পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডিকেও। যাঁদের বিরুদ্ধে পোস্টিং দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই ৩৫০ জন শিক্ষককে তদন্তকারি সংস্থারা প্রয়োজন মনে করলে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ।
এই মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, -‘ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। অভিযুক্ত শিক্ষকরা চাইলে মামলার নথি সংগ্রহ করতে পারবেন। তার জন্য একটি বাংলা এবং ইংরেজি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। যেখানে থাকবে মামলা এবং মামলাকারী আইনজীবীর নম্বর। সাতদিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে’ ।
আগামী ২৮ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। গত জুলাই মাসের শেষের দিকে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২০২০ সালের প্রাথমিক নিয়োগে পোস্টিং দুর্নীতিতে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন । পাশাপাশি ওইদিন রাতেই মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি ।
নির্দেশে বলা হয়েছিল,-‘ জেলের সুপার কোনও ভাবেই মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় বাধা দিতে পারবেন না। যদি জেল সুপার সহযোগিতা না করেন সেটা আদালতের নজরে এলে সুপারের বিরুদ্ধে আদালত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’ ।
এমনকী মানিক ভট্টাচার্য যাতে সুপ্রিম কোর্টের থেকে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ না নিতে পারেন, তার জন্য রাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বাঁকুড়া, বীরভূম, হাওড়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার ৪০০ জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা করে বদলির জন্য নেওয়া হয়েছে বলে আদালতে সওয়াল-জবাব পর্বে উঠে এসেছে।
বীরভূম, মুশিদাবাদ, বাঁকুড়া, হুগলির শিক্ষকরা মামলা করেন পৃথক ভাবে । তাঁদের বদলি নিয়ে ভাঁওতা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে । ”এখানেও ‘মাস্টারমাইন্ড’ মানিক ভট্টাচার্য? ” কী ঘটনা ঘটেছে? সেটা সিবিআই সামনে আনতে পারে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সিবিআই তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি।
এরপর শুক্রবার অর্থাৎ এদিন পোস্টিং দুর্নীতির মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই বলে নির্দেশ জারি করেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলায় যুক্ত করা হল ইডিকে। তদন্তকারী সংস্থা প্রয়োজন মনে করলে ৩৫০ জন শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। বিচারপতি এদিন স্পষ্ট করে দেন, যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন তদন্তকারীরা।