পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘মোদি পদবি’ মামলায় আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে রাহুল গান্ধিকে দু বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল কোর্ট। সাজা দেওয়া সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের বেআইনি পদোন্নতির উপর স্থগিতদেশ দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার রাহুলের সাজা স্থগিত করতে না চাওয়া গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতিকে বদলি করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছককে পটনা হাই কোর্টে বদলি করেছে। বিচারপতি প্রচ্ছকের সঙ্গেই বদলি করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন হাই কোর্টের আরও আট জন বিচারপতিকে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় কর্নাটকে একটি জনসভায় রাহুল গান্ধি। ‘মোদি পদবি’ নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। গত মাসের ২৩ তারিখ সুরাতের নিম্ন আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং দু বছরের কারাদণ্ড দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথম গুজরাট হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল।
গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক সুরাত আদালতের রায়কে বহাল রাখেন। অর্থাৎ তিনি ওই রায়ে স্থগিতাদেশ দিতে চাননি। তারপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কড়া নাড়ার পর অবশেষে জেলযাত্রার সাজা স্থগিত হয়। গত জুলাই মাসে বিচারপতি হেমন্ত প্রাচ্ছক ১২৩ পৃষ্ঠার রায় দিয়েছিলেন। রাহুল গান্ধির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, ‘সাজা স্থগিত করার মতো কোনও বিষয় নেই মামলাটিতে।’ গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রকাশিত একটি নথিতে বলা হয়েছে, কলেজিয়াম ‘ন্যায়বিচার’ আরও ভালভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ২৩ জন বিচারপতিকে বদলির সুপারিশ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গায় অভিযুক্ত প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী মায়া কোদনানির পক্ষে আইনজীবী দলের সদস্য ছিলেন বিচারপতি প্রাচ্ছক। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে গুজরাত সরকারের সহকারি আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছিলেন। ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছর পরে, তিনি গুজরাত হাইকোর্টের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্থায়ী পরামর্শদাতা নিযুক্ত হন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন।