পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠেছিল এক পুলিশ আধিকারিক কে এক গেরুয়া সাংসদের গালিগালাজ করা মামলা। এক পুলিশ আধিকারিককে কুরুচিকর মন্তব্য করার মামলায় আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত আইনী রক্ষাকবচ পেলেন সৌমিত্র খাঁ । তবে, সাংসদ যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তার জন্য তাঁকে ভর্ত্সনা করেছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ।সেই মামলায় আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোনও কঠোর পদক্ষেপ না-নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ । এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থারেএ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে ।
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি এজলাসে জানান , ”যে ভাষা সৌমিত্র খাঁ বলেছেন বলে পুলিশ অভিযোগে লিখেছে, সেটা প্রবল খারাপ । একজন সাংসদের মুখ থেকে এই ভাষা আশা করা যায় না । আগাম জামিন চান বা এফআইআর খারিজের জন্য অন্য কোর্টে আবেদন করুন । তবে, ১৩ এপ্রিল দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোনও কড়া পদক্ষেপ নেবে না পুলিশ । প্রয়োজনে এফআইআর খারিজের আবেদন করতে পারেন তিনি ।”
এদিন সৌমিত্রর আইনজীবী সিঙ্গেল বেঞ্চে সওয়াল-জবাবে বলেন , -‘ সোনামুখী থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ করতে গিয়ে, একের পর এক মামলায় হেনস্তার স্বীকার হন সাংসদ সৌমিত্র খান । আইসি-র বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন সৌমিত্র’ ।
সেই ঘটনায় আইসি-কে কু-মন্তব্য করার অভিযোগ এনে থানার এক এসআই অভিযোগে দায়ের করেন । সেখানে ৩৫৪এ ধারা যুক্ত করা হয় । মূলত আইসি-র পরিবারের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে সেই ধারার নিরিখে । মোট দু’টি মামলা তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে বলে আইনজীবী জানান ।
সৌমিত্র খাঁ-র আইনজীবী দাবি করেছেন, ”পুলিশকে নিয়ে যেহেতু এই মামলা । তাই পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করতে পারে না ।”এর প্রতুত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন , “ভোটের মুখে কোনও রক্ষাকবচ দিলে আপত্তি নেই । কিন্তু, ধারা প্রয়োগ নিয়ে হস্তক্ষেপ করলে আমাদের আপত্তি আছে । কারণ, একজন সাংসদ যে ভাষায় আইসি এবং তাঁর পরিবার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন সেটা প্রবল আপত্তিকর ।” শেষ পর্যন্ত বিচারপতিও মেনে নেন, সৌমিত্র খাঁ কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন । যা একজন সাংসদের মুখে আশা করা যায় না ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সৌমিত্র খাঁ সোনামুখি বিডিও অফিসের সামনে এক জনসভা করেছিলেন । সেখান থেকে সোনামুখি থানার আইসি-কে ‘তুই-তোকারি’ করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কূটক্তি করেন বলে অভিযোগ । এমনকি ওই জনসভা থেকে আইসি-কে হুমকিও দেন তিনি । সেই ঘটনায় পুলিশ বিষ্ণুপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে । গ্রেফতারি এড়াতে সাংসদ কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচ চান ।আদালতের পর্যবেক্ষণ, -‘ সাংসদ সৌমিত্র খাঁ যে ভাষায় একজন আইসিকে আক্রমণ করেছেন, তা কুরুচিকর’। এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে অন্য আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিচারপতি।