পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: কুকি-মেইতেই সংঘর্ষে দেড় মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। এখনও জারি হয়নি রাষ্ট্রপতি শাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরে গিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করেছেন কিন্তু লাভ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং কিচ্ছু করতে পারেননি। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিরপেক্ষতার তোয়াক্কা করছে না। একতরফা ভাবেই মেইতেইদের সুরক্ষা দিচ্ছে। সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১২০ জন। ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় শিবিরে। এসবের মধ্যেই শুক্রবার রাতে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষজন মণিপুরের উপভোক্তা ও খাদ্য বিষয়ক মন্ত্রী, লেইশ্যাংথেম সুসিন্দ্রো ব্যক্তিগত গুদাম ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। শুক্রবার রাতের আগুনের পর পুড়ে ছাই হয়েছে ওই গুদামঘর। কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই সেখানে।
গুদাম ঘরের পর খুরাই এলাকার মন্ত্রীর বাসভবনও জ্বালানোর চেষ্টা করে বিক্ষুব্ধ জনগন। ততক্ষণে পুলিশ এসে বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাসের শেল ফাটানো শুরু করলে, এলাকা ছেড়ে পালায় তারা। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কোনও প্রাণহানি হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে মণিপুর। কোনওমতে প্রাণভয়ে দিন কাটছে বাসিন্দাদের। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি শাসিত মণিপুরের বিজেপি বিধায়করা রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করার পরও কোনও ফল হয়নি। হিংসার মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে এবার সরাসরি মন্ত্রীদের বাড়িঘর জ্বালানো শুরু করেছে বিক্ষুব্ধ জনগন। গত ১৪ জুন রাজ্যের মহিলা মন্ত্রী নেমচা কিপগেনের সরকারি বাসভবনে আগুন ধরানো হয়। তার পরের দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে রাজন সিং-র বাড়িতেও আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হয়।
গত ৩ মে ধরে এই অশান্তি চলছে। মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেইরা এসটি মর্যদা পেতে চাইছে। এতে আপত্তি করেছিল খ্রিস্টান ও আদিবাসী, কুকি জনজাতির মানুষ। তাঁদের দাবি, মেইতেইরা এসটি-র মর্যদা পেলে তারা পার্বত্য এলাকায় গিয়ে কুকিদের জমি দখল করবে।
ওয়াকিফহাল মহলের মতে, এই অশান্তির জন্য দায়ী গেরুয়া রাজনীতি। মেরুকরণের রাজনীতিতে শান দিতেই মেইতেইদের উসকে দেওয়া হয়েছিল।