পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ‘গান্ধি শান্তি পুরস্কার’ সম্মান নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ১ কোটি টাকা নগদ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করল শতাব্দী প্রাচীন গীতা প্রেস। ২০২১ সালের ‘গান্ধি শান্তি পুরস্কার’ -এর জন্য উত্তর প্রদেশের গোরখপুরের প্রাচীন প্রকাশনা সংস্থা গীতা প্রেসকে মনোনীত করেছে কেন্দ্র। তবে সোমবার গোরখপুরের এই গীতা প্রেস কেন্দ্রকে জানিয়েছে, স্বীকৃতি গ্রহণ করবে, তবে পুরস্কারের অর্থ তারা নেবে না। সেই অর্থ অন্যত্র ব্যয় করার জন্য কেন্দ্রকে পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক বলেছে, ‘অহিংসা এবং অন্যান্য গান্ধিবাদী পন্থায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গীতা প্রেস-কে এই সম্মান জানানো হচ্ছে।’ ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার, মহাত্মা গান্ধির আদর্শকে শ্রদ্ধা জানাতে ‘গান্ধি শান্তি পুরস্কার’ প্রদান শুরু করেছিল। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য নগদ ১ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে একটি শংসাপত্র, একটি ফলক এবং একটি ভারতীয় ঐতিহ্যের হস্তশিল্প বা হ্যান্ডলুমের তৈরি জিনিস উপহার দেওয়া হয়।কংগ্রেস গীতা প্রেসকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে, এটিকে “প্রতারণা” এবং ‘সাভারকর এবং গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার মতো’ বলে অভিহিত করেছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বাধীন জুরি সর্বসম্মতিক্রমে গীতা প্রেসকে পুরস্কারের প্রাপক হিসাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
I congratulate Gita Press, Gorakhpur on being conferred the Gandhi Peace Prize 2021. They have done commendable work over the last 100 years towards furthering social and cultural transformations among the people. @GitaPress https://t.co/B9DmkE9AvS
— Narendra Modi (@narendramodi) June 18, 2023
মোদি ট্যুইটে লেখেন, ‘২০২১ সালের গান্ধি শান্তি পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমি গোরখপুরের গীতা প্রেসকে অভিনন্দন জানাই। তারা গত ১০০ বছর ধরে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রশংসনীয় কাজ করেছে।’ অভিনন্দন জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি ট্যুইট করে লিখেছেন, ‘২০২১ সালের ‘গান্ধি শান্তি পুরস্কার’ পাওয়ার জন্য ভারতের সনাতন ধর্মের ধর্মীয় সাহিত্যের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র গোরখপুরের গীতা প্রেসকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’অন্যদিকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা মিডিয়া ইনচার্জ জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘২০১৫ সালে অক্ষয় মুকুল এই সংস্থার একটি সুন্দর জীবনী লিখেছিলেন। সেখানে তিনি মহাত্মার সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের খারাপ সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক ক্ষেত্রে গান্ধির সঙ্গে তাদের লড়াইয়ে দিকগুলি উন্মোচন করেছেন। কাজেই সরকারের এই সিদ্ধান্তটি সত্যিই হাস্যকর এবং এটা সাভারকর ও গডসেকে পুরস্কৃত করার শামিল।”উল্লেখ্য, গান্ধি শান্তি পুরস্কার পুরস্কারটি জাতি, ভাষা, বর্ণ, ধর্ম বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল ব্যক্তির জন্য উন্মুক্ত।
২০১৯ সালে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদকে ও ২০২০ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বাংলাদেশকে দেওয়া হয়। ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গীতা প্রেস। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রকাশনা সংস্থা। ১৪টি ভাষায় ৪১.৭ কোটি বই প্রকাশ করেছে এই সংস্থা। এর মধ্যে শ্রীমদ ভগবদ গীতাই ছাপা হয়েছে ১৬.২ কোটি।