পুবের কলম প্রতিবেদক: অর্থনীতি বলে গাড়ি বিক্রির পরিমাণই বলে দেয় একটি রাজ্য বা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষমতা কেমন, তার অর্থনীতিই বা কতখানি শক্তিশালী। আর এই তত্ত্বে ভর দিয়েই এবার চোখ বুঁজে বলে দেওয়া যেতে পারে যে, প্রতিযোগিতার বাজারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার কাছে হেরে বসে আছে নরেন্দ্র মোদির ভারত।
কেননা, গত বছরের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে দেশে সব ধরনের গাড়ি বিক্রির হার যত বেড়েছে তার থেকেও বাংলার বুকে সেই হার বৃদ্ধি বেশি হয়েছে। গত মেতে দেশে গাড়ি বিক্রির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লক্ষ ১৯ হাজার ৪১৪। তার মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাতেই বিক্রি হয়েছে ৯১ হাজার ২৫৬টি গাড়ি।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালের মে মাসের তুলনায় ২০২৩ সালের মে মাসে যেখানে দেশে ১০.১৪ শতাংশ গাড়ি বিক্রি বেড়েছে, সেখানে বাংলায় সেই বৃদ্ধির হার ১১.২২ শতাংশ। এখানেই মোদির ভারতকে হারিয়েছে মমতার বাংলা। সর্বভারতীয় স্তরে গাড়ি বিক্রি যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে বাংলা।
ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার অ্যাসোসিয়েশন দেশ ও রাজ্য ভিত্তিক গাড়ি বিক্রির যে তথ্য প্রকাশ করে সেখানেই দেখা যাচ্ছে মে মাসে গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে বৃদ্ধির নিরিখে দেশের থেকে এগিয়ে গিয়েছে বাংলা।
মূলত ডিলারদের শোরুম থেকে ক’টি গাড়ি ক্রেতাদের কাছে গেল, তার হিসেবের নিরিখেই এই তথ্য প্রকাশ করেছে ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার অ্যাসোসিয়েশন। সেই তথ্য বলছে, মমতার বাংলায় ১২.৭৭ শতাংশ বেড়েছে মোটর সাইকেল বা স্কুটারের মতো দু’চাকা গাড়ির বিক্রি। মোট বিক্রির সংখ্যা ৭৭ হাজার ৪৯৫। ব্যক্তিগত ৪ চাকা গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ৮৭৮টি। গত বছরের মে মাসের তুলনায় তা সামান্য বেশি। তবে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি। গত বছর মে’তে যেখানে ৩ হাজার ৩৪২টি গাড়ি বিক্রি হয়েছিল, সেখানে এবার বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ২ হাজার ৮১৩টি।
বর্ষার মুখে বেড়েছে ট্রাক্টর বিক্রির সংখ্যা। গতমাসে এরাজ্যে মোট ১ হাজার ১৮৬টি ট্রাক্টর বিক্রি হয়েছে। বিক্রি বৃদ্ধির হার প্রায় ২৭ শতাংশ। গত দু’মাস ধরেই ট্রাক্টর বিক্রির হার বেশ ভালো, বলছেন ডিলাররা।
ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার অ্যাসোসিয়েশন’র পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্ট্যারের চেয়ারম্যান সোহম মিশ্র জানিয়েছেন, দু’চাকা গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিয়ের মরশুম। এদিকে পশ্চিমবঙ্গে অটোর পারমিট বৃদ্ধি পাওয়ায়, তার সুফল পেয়েছে তিনচাকা গাড়ি। তবে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের চার চাকা গাড়ির বিক্রি সাদামাঠা থাকায়, কিছুটা চিন্তায় ডিলাররা, মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ এতে শোরুমে অবিক্রিত গাড়ির স্টক বাড়ছে।