পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাটঃ বসিরহাট থানার ভারত-বাংলাদেশ ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশ পালানোর সময় ১৫৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এক তালিবান সমর্থককে আটক করে। বাংলাদেশের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর বিশ্বাস নামে ওই যুবক কিছুদিন আগে তামিলনাড়ু পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে আত্মগোপন করে বাংলায় ঢুকে বাংলাদেশ পালানোর ছক করেছিল। বিএসএফ জাহাঙ্গীরকে আটক করে বসিরহাট থানায় আনার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার তাকে জেরা করতে বসিরহাটে আসে ৩ সদস্যের এনআইএ র গোয়েন্দা দল। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, প্রাথমিক জেরায় জানা গেছে বছর ২৮ এর জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার নলড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত আট বছর আগে সে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে এ দেশে প্রবেশ করে তামিলনাড়ুর চেন্নাই যায়। সেখানে ইরোট জেলায় পেল্লাই গ্রামে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। সেখানে জাহাঙ্গীর এর সঙ্গে আরও শতাধিক বাংলাদেশি বিভিন্ন কাজে যুক্ত ছিল। সম্প্রতি তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করায় উৎসাহিত হয়ে পড়ে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস সহ তাদের আট-দশজন সঙ্গী। সে মোবাইলে বাংলাদেশীদের উৎসাহিত এবং একজোট করার চেষ্টা করে। এদিন গোয়েন্দারা জেরা করার সময় ওই বাংলাদেশি জানায় তালিবানদের সমর্থনে আমরা একজোট হচ্ছি বুঝতে পেরে এলাকার মানুষ আমাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এনআইএ গোয়েন্দাদের দাবি, জাহাঙ্গীরের কথা মোবাইল ট্র্যাক করে চেন্নাইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারায় তাদের ধরপাকড় শুরু করে। দু’জন ধরা পড়ার পর গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয় যে তাদের একত্রিত করার মূল পান্ডা জাহাঙ্গীর সহ কয়েকজন কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছে। চেন্নাইয়ের গোয়েন্দারা পলাতক বাংলাদেশিদের ছবি দেশের সমস্ত সীমান্তবর্তী থানা এবং বিএসএফ আধিকারিকদের হাতে তুলে দেয়।পুলিশ জানায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা দিয়ে পাসপোর্ট বিহীন অবৈধভাবে বাংলাদেশ পালানোর সময় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করে তাকে বসিরহাট থানায় আনা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে চেন্নাই থেকে পালানো বাংলাদেশীদের অন্যতম এই জাহাঙ্গীর বিশ্বাস।দ্রুত খবর যায় গোয়েন্দা দপ্তরে। তারই ভিত্তিতে এদিন সকালে এনআইএর দুই অফিসার সহ তিনজন বসিরহাটে আসে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা একরকম নিশ্চিত হয় এই বাংলাদেশী চেন্নাই থেকে পালিয়ে আসছিল। পুলিশ জানায় গোটা ঘটনাটি চেন্নাইয়ের ইরোট থানায় থানা সহ গোয়েন্দাদের জানানো হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই চেন্নাই থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি দল বসিরহাটে আসবে জাহাঙ্গীরকে জেরা করতে।