উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: আর কিছু দিনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা হতে চলেছে। আর তাঁর আগে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। আর তাতে উদ্ধার হচ্ছে প্রচুর পরিমানে বেআইনি অস্ত্র। আর এবার অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল পুলিশ। শাড়ির ব্যবসার আড়ালে চলত এই কারখানা। বাড়ির মধ্যেই এই কাজ হত। তারই আড়ালে তৈরি হয়েছিল অস্ত্র কারখানা।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই অস্ত্র কারখানার হদিশ পায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানা এলাকার রামচন্দ্রপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেল, বেশ কিছু দিন ধরে ওই বেআইনি অস্ত্র কারখানার খবর ছিলো পুলিশের কাছে। তাই খরিদ্দার সেজে ওই বাড়িতে যায় পুলিশের একটি বিশেষ দল। সেখান থেকে উদ্ধার হয় একের পর এক আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। খড়ের ছাউনির ঘরের মধ্যে এই অস্ত্র কারখানাটি গড়ে উঠেছিল। মহিলারা ওই বাড়িতে শাড়িতে জরির কাজ করতেন। আর তার আড়ালেই চলত এই অস্ত্রের কারবার।বারুইপুর পুলিশ জেলার এসওজি এবং বাসন্তী থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে ওই বাড়ি থেকে ৭টি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বড় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গেছে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম।
এই ঘটনায় মোতালেফ ওরফে হাসান পুরকাইত এবং জয়নাল মোল্লা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে মোতালেফ ২০১৯ সালে এক বার গ্রেফতার হয়ে ছিলেন। শনিবার বারুইপুর পুলিশ জেলার অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার মিস পুষ্পা বলেন, আমাদের কাছে কিছু দিন ধরে খবর ছিলো যে বাসন্তী থানার রামচন্দ্রপুর এলাকায় অস্ত্রের কারবার হচ্ছে।ওখানে হাসান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালে আগ্নেয়াস্ত্র কারখানা তৈরি করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিলো ওই ব্যাক্তিকে।
জেল থেকে বেরিয়ে আবার নতুন করে অস্ত্র কারখানা তৈরি করছেন ঐ ব্যক্তি। গোপন সূএে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে পুলিশের একটি দল হানা দেয়। ওই সময় হাসানের বাড়ি থেকে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়।তবে এই অস্ত্র তৈরি করে সে কি ভাবে ও কোথাও সেগুলো বিক্রি করতো এ সব জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে এদিন জানান পুলিশ সুপার।
পাশাপাশি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য ওই অস্ত্র কারবার চলছিল কি না, সেটাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।আর এই ভাবে ভোটের আগে নিয়মিত বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের কাজ চলবে বলে পুলিশ সূএে জানা গেল।