পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ চড়ছে। সকাল হতে না হতেই প্রচণ্ড দাবদহে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে ত্বক, শুকিয়ে যাচ্ছে দেহের জল। পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই স্কুল- কলেজ ছুটি দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আপাতত কয়েকদিন এই গরমের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার কোনও সম্ভবনা নেই। আর তাপমাত্রা যত বাড়ছে তারসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা।
গত রবিবার একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শামিল হতে গিয়ে মহারাষ্ট্রে ১৩ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। অসুস্থ হয়েছে ৬০০ জনেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের শরীর কে হাইড্রেটেড রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তা না করলেই ঘটতে পারে চরম বিপদ।
মূলত তীব্র তাপপ্রবাহ হিটস্ট্রোকের মূল কারণ। কিন্তু কি এই হিটস্ট্রোক? কীভাবে এড়ানো যাবে?
গরমে শরীরের তাপমাত্রা খুব বাড়তে থাকে। ডিহাইড্রেশন হয়। শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য যে পরিমাণ জল প্রয়োজন হয়, তা না থাকলে শরীরের অন্য অর্গ্যানগুলিতে রক্ত সঞ্চালন হয় না। তার জেরে ধীরে ধীরে অর্গ্যান ফেলিয়োর হয়। প্রথমে ব্রেনে প্রভাব পড়ে। তার জেরে মানুষ ঝিমিয়ে পড়ে। অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, শরীরের তাপমাত্রা মাত্রারিক্ত হলে আর সঠিক চিকিৎসা না পেলে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ
১ কথাবার্তা অসংলগ্ন ও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়া
২ জ্ঞান হারান
৩ অতিরিক্ত ঘাম
৪ খিঁচুনি
৫ শরীরের তাপমাত্রা খুবই বেড়ে যায়। এই সময় তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পারে
৬ বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে
৭ দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস
৮ হার্টরেট বেড়ে যায়
৯ মাথা ব্যথা হয়
কি ভাবে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করবেন?
১ হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রচুর জল পান করা এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা। এছাড়াও গ্রীষ্মকালীন পানীয় যেমন নারকেল জল, পুদিনা জল, লেবু জল, তাজা ফলের রস এবং বাটারমিল্ক খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
২ প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন প্রয়োগ করা যা আপনার ত্বককে তীব্র রোদে হলকা থেকে বাঁচাতে পারে।
৩ সব সময় হালকা রঙের ও ঢিলেঢালা পোশাক পড়ুন। যাতে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। এবং সরাসরি তীব্ররোদ থেকে বাঁচতে অবশ্যই মাথা ঢেকে থাকুন।
৪ চেষ্টা করবেন বাইরে বেরনোর সময় ছাতা ব্যবহার করতে
৫ দিনের বেলায় ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে রাখতে। এবং পর্দা দিয়ে সেগুলো ঢেকে রাখতে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
এই গরমে উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া কেন উচিত নয়, এই প্রশ্নের উত্তরে ফরিদাবাদের এশিয়ান হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান কোমল মালিক জানিয়েছেন, আমিষ খাবার গরমের সময় দেহে জলের অভাব সৃষ্টি করে কারণ এই ধরণের খাবার হজম করতে সময় লাগে। হজম প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে তা শরীরে তাপমাত্রা বাড়ায়, ডিহাড্রেশন ঘটায়। এছাড়াও পেট ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বা শরীরের তাপ ঠিক রাখতে চা এবং কফির পরিবর্তে লেবু জল, নারকেল জল, বাটারমিল্ক এবং ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ তরল জাতীয় খাবার খান। মশালাদার খাবার এড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।