নাজির হোসেন লস্কর, মগরাহাট: একের পর এক পাড়ায় টিউবওয়েল থেকে জল পড়ছে না। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে নাজেহাল মগরাহাটবাসী। গ্রামে গ্রামে পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। এলাকায় এক টিউবওয়েল থেকে জল না পেলেই মাত্রাতিরিক্ত জল উত্তোলনের জন্য পাশের পাড়ার টিউবওয়েলটিও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মগরাহাটের অধিকাংশ জায়গায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও সেও অখেজো হয়ে আছে। প্রায় এক দশক ধরে এখানকার সমস্যা, ট্যাঙ্কে মজুত জলের তুলনায় চাহিদা বেশি হওয়ায় শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পানীয় জল পৌঁছয় না কোনও দিন। ফলে পানীয় জলের জোড়া সমস্যায় জেরবার মগরাহাটের বাসিন্দারা।
জানা গেছে, মগরাহাট ২ ব্লকের আওতাভুক্ত ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ১৫০টির মতো টিউবওয়েল থেকে জল পড়ছে না। এর মধ্যে স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরও বেশ কয়েকটি টিউবওয়েল অখেজো হয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় বিডিও সেখ আবদুল্লা বলেন, প্রচন্ড দাবদাহ, উষ্ণতা এবং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাত্রাতিরিক্ত জল উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেকটাই নেমে গেছে। শেষ দু’বছরে যেসব টিউবওয়েল বসানো হয়েছে সেগুলোর গভীরতা ১২০০ ফুটের কাছাকাছি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আগেরগুলো ১০০০ ফুট হওয়ায় গ্রীষ্মের দাবদহে পানীয় জল পড়ছে না।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সব থেকে সমস্যা দেখা দিয়েছে হোটর মর্যাদায়। এই পঞ্চায়েতে প্রায় ২৫টির মতো টিউবওয়েল থেকে জল পড়ছে না বা খারাপ হয়ে গেছে। পরের দিকে আছে মগরাহাট পূর্ব, পশ্চিম, যুগদিয়া, গোকর্ণী গ্রাম পঞ্চায়েত। এখানকার অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছেন। এই সব সংখ্যালঘু এলাকায় বাড়ির মহিলারা পড়েছেন বেশ সমস্যায়। রোজা রেখে এই প্রচণ্ড দাবদহের মধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে।
পানীয় জলের হাহাকার মেটাতে পদক্ষেপ নিয়েছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও বলেন, শুধুমাত্র টিউবওয়েল খারাপ এক্ষেত্রে পঞ্চয়েত এবং ব্লক থেকে দ্রুততার সারাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া যেসব জায়গায় জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য পানীয় জল মিলছে না সেখানে পুণরায় নতুন পাইপ বসাতে হবে। ব্লকের কাছে সেই ফান্ড না থাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে চিঠি করা হয়েছে। দ্রুত ওয়াটার ট্যাঙ্ক দিয়ে বা টিউবওয়েলগুলি সারাই করে সমস্যা সমাধান করার বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। আশাকরি, দ্রুত পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।