পুবের কলম প্রতিবেদক: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দুর্দান্ত ফর্মে নিখাত জারিন। চলতি বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে শুরু থেকেই দুর্বার গতিতে ছুটেছে নিখাত জারিনের বক্সিং বাউট। সেই গতি অব্যাহত রইল ফাইনালের আসরেও। ৫০ কেজি বিভাগে ভিয়েতনামের গুয়েন থাই তামকে ৫-০ ফলে হারিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন হায়দরাবাদের নিখাত জারিন। দিল্লিতে আয়োজিত হওয়া এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম রাউন্ড থেকেই নিখাত জারিনের লড়াই নজর কেড়েছিল সকলের। মেরি কমের পর নিখাত জারিন দ্বিতীয় কোনও ভারতীয় বক্সার যিনি একাধিকবার বক্সিংয়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেন। উল্লেখ্য মেরি কম মোট ৬ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নিখাত দ্বিতীয় ভারতীয় বক্সার হিসেবে মেরিকে অনুসরণ করলেন। উল্লেখ্য ভারতীয় বক্সিংয়ের আঙিনায় নিখাত জারিনের পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। কিছুদিন আগেই মেরি কম ও নিখাত জারিনের মধ্যে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই বিতর্ক মিটেও যায়। নিজেকে বক্সিং রিংয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করার ক্ষেত্রে দিনরাত মেহনত করতে থাকেন হায়দরাবাদের নিখাত জারিন।
২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকে অবশ্য যেতে পারেননি নিখাত জারিন। সেই আক্ষেপ একটা ছিলই। তারপরেই বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সোনা তুলে নিয়েছিলেন নিখাত। এবারও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে প্রতিটা লড়াইয়ে তাঁর দক্ষতা দেখেছে বিশ্ব বক্সিং। একমাত্র কোয়ার্টার ফাইনালেই ২টো পয়েন্ট নষ্ট করেছিলেন তিনি। যদিও থাইল্যান্ডের প্রতিযোগিকে ৫-২ পয়েন্টে হারিয়ে তিনি সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। সেমিতে কলম্বিয়ার ভ্যালেন্সিয়াকে ৫-০ ফলে হারিয়ে দিয়েছিলেন নিখাত জারিন। সেই ভ্যালেন্সিয়া যিনি টোকিও অলিম্পিকে মেরি কমের ছুটি করে দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য মেরি কমের সঙ্গে ঝামেলার পর টোকিও অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিখাত জারিন চেয়েছিলেন তাঁকে যেন মেরি কমের বিরুদ্ধে খেলতে দেওয়া হয়। ড্র-ও এমনভাবে করা হয়েছিল যে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনে মেরি কমের বিরুদ্ধেই পড়েছিলেন নিখাত। কিন্তু জিততে না পারার আক্ষেপ তাঁকে কুরে কুরে খেয়েছে। অলিম্পিকের পর যতগুলি প্রতিযোগিতা হয়েছে নিখাত নিজেকে প্রমাণ করেছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আসরেও নিখাতের পারফরমেন্স উল্লেখ করার মত ছিল। অলিম্পিকের পরে আয়োজিত দুটো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আসরেই মাত করে দিলেন নিখাত জারিন। ফাইনালে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে নিখাতের লড়াই অনেকদিন মনে রাখবেন সকলে। প্রতিটা পাঞ্চে ছিল দুর্দান্ত আত্মবিশ্বাস। সঙ্গে নিখুঁত পারফেকশন। ভিয়েতনামের গুয়েন থাই তাম দাঁড়াতেই পারলেন না নিখাতের নিখুঁত পাঞ্চের সামনে।