পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান দাবি করেছেন, তিনি ইসলামাবাদের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের বাইরে তার গাড়ি থেকে নামতে পারেননি কারণ “অজানা লোক” তাকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে কৌশলগতভাবে সেখানে প্রস্তুত ছিল। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ এর একটি প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার আসার আগে শনিবার জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের বাইরে একটি মৃত্যুফাঁদ তৈরি করা হয়েছিল।তারা আমাকে হত্যা করতে বা আমাকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল এবং নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে কারাগারে রাখতে বেলুচিস্তানে নিয়ে যেতে চেয়েছিল।”
ইমরান বলেন,”আমি যদি দ্রুত কমপ্লেক্স থেকে সরে না যেতাম তাহলে রক্তপাত ঘটতে পারত। কারণ পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা আমার দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করতে এবং আমাকে হত্যার আড়াল হিসাবে ব্যবহার করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল।”
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান আরও অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের জোট সরকার তাঁর দলকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র করছে। ইসলামাবাদ থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে ইমরান খান বলেন, তারা (সরকার) পিটিআইকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
বক্তব্যে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীকে পরস্পরের বিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে।
ইমরান খান বলেন, এই ষড়যন্ত্র খুবই ভয়াবহ। এটা দেশকে ধ্বংস করে দিতে পারে। প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিটিআই যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন সেনাবাহিনীর সঙ্গে দলটির সম্পর্ক দেখে এই জোট সরকারের শরিকেরা ‘ব্যথিত’ হয়েছিল।
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান বলেন, ‘আজকে নওয়াজ ও জারদারি আমাদের দেশদ্রোহী বলছে। তাঁরা অতীতে দেশের বাইরের প্ল্যাটফর্মে গিয়েছিল এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাক্ষাৎকার দিয়েছিল।’
এদিকে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী নেতা ইমরান খানকে তলব করেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট।
মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বুধবার পার্লামেন্টে এক বিশেষ অধিবেশন বসবে। তাতে ইমরান খানকে উপস্থিত থাকতে হবে।মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠক হয়েছে। সেখানে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত সবাই এই মর্মে একমত হয়েছেন যে, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটার পাশাপাশি অরাজকতার উত্থান ঘটছে এবং এজন্য প্রধানত দায়ী পিটিআই। দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ইমরান খানকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।
এদিকে পাকিস্তানে পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ তথা পিটিআইয়ের এক নেতা এবং মসজিদের এক ইমামসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন।